লাকসামে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্মেলন-২০২২

 

রবিউল হোসাইন সবুজ, লাকসাম(কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা লাকসাম থানাধীন মজলিসপুর পঞ্চশীল প্রার্থনা ধর্মীয় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ধন্মাংকুর বৌদ্ধ বিহারে প্রাঙ্গণ থেকে দুইদিনব্যাপী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় সম্মেলন-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ধন্মাংকুর বৌদ্ধ বিহারের উদ্যোগে দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মসভায় পূর্ণার্থীদের উদ্দেশ্যে প্রধান ধর্মদেশনা প্রদান করেন,কুমিল্লা-নোয়াখালী সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির উপদেষ্ঠা-আশীর্বাদক ভদন্ত শীলভদ্র মহাথের। কুমিল্লা-নোয়াখালী সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির উপদেষ্ঠা-ভদন্ত জিনসেন মহাথের সভাপতিত্বে, মজলিশপুর, ধর্ম্মাংকুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ তিস্তার ভদন্ত প্রজ্ঞাজ্যোতি মহাথের পরিচালনায় ধর্মসভায় অনুষ্ঠিত হয়।
এতে উপস্থিত ছিলেন,প্রধান অতিথি,বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাষ্ট, বাবু জ্যোতিষ সিংহ ট্রাষ্টি।প্রধান জ্ঞ্যাতি,কুমিল্লা-নোয়াখালী সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির উপদেষ্ঠা-ভদন্ত প্রজ্ঞাশ্রী মহাথের।বিশেষ জ্ঞ্যাতি,কুমিল্লা-নোয়াখালী সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির সভাপতি-ভদন্ত জিনানন্দ মহাথের।প্রধান ধর্মদেশক,সংঘরাজ ভিক্ষু সমিতির সম্পাদক-ভদন্ত ধর্মতিলক স্থবির।বিশেষ ধর্মদেশক,সাতকানিয়া লোহাগাড়া রাঙ্গুনিয়া শীলক হরিহর বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ দেশকভদন্ত সুমনশ্ৰী স্থবির। ধর্মসেবক,সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার অর্থ-সচিব ভদন্ত ধর্মপাল মহাথের, সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক-ভদন্ত উত্তমানন্দ স্থবির।
বিশেষ অতিথি, কুমিল্লা বৌদ্ধ সমিতির সভাপতি বাবু এস. কে সিন্হা।লাকসাম বাকই দক্ষিণ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান-আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।
ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল,ভোরে পরিত্রাণ পাঠ, পুষ্পপূজা ও ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ, ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, সংঘদান ও ভিক্ষু সংঘের ধর্ম দেশনা, অনুত্তর পুণ্যক্ষেত্র ভিক্ষু সংঘকে পিণ্ডদান। দুপুরে উদ্বোধনী সংগীত, দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান, পূজনীয় ভিক্ষু সংঘের ধর্মোপদেশ ও সন্ধ্যায় ফানুস বাতি উত্তোলন।
ধর্মসভা ও পঞ্চশীল গ্রহণের পর চীবর দানের মাধ্যমে ‘মুক্তির অহিংসা বাণী ছড়িয়ে যাক মানুষে মানুষে এবং সামনের দিনগুলোতে শান্তি ফিরে আসুক ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের’ এমন প্রার্থনার মধ্যে দিয়ে চীবর দানের সমাপ্তি ঘটে। আর বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় প্রদীপ প্রজ্বলন ও ফানুস বাতি উত্তোলন।
উল্লেখ্য, মহামতি বুদ্ধের প্রজ্ঞাদীপ্ত শিক্ষা ‘বর্ষাবাস তথা বর্ষাব্রত’ পালনের সমাপনী অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা এবং দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব হলো বৌদ্ধদের অতি পবিত্র ও মাহাত্ম্যপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ পূত-পবিত্র অনুষ্ঠান-উৎসবের মধ্যদিয়ে বৌদ্ধরা তথাগত গৌতম বুদ্ধের পরম কল্যাণময় শিক্ষা চর্চার ব্রত হয়। হিংসা ক্রোধ ও মোহের বদলে প্রেম দয়া ও ক্ষমায় মানুষের কল্যাণে তপস্যা ভিক্ষুদের। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্রকে বলা হয় চীবর। তাই এ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের পরিধেয় বস্ত্রের অভাব দুর করতেই কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান। তাই বৌদ্ধদের কাছে প্রবারনা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান অত্যন্ত গুরুত্ববহ পুণ্যানুষ্ঠান।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • রবিবার (সকাল ৭:৪২)
  • ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১০ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১