প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা করেই সকল ধর্মের মানুষের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই সুফিদের পরিভাষায় তাওহীদে আইয়ান হিসেবে পরিচিত যা আজ সংঘাতময় বিশ্ব পরিস্থিতিতে একান্ত প্রয়োজন। তাই সংঘাতমুক্ত শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট থাকার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মাইজভাণ্ডারী একাডেমির ৭ম জাতীয় সুফি সম্মেলনের সমাপনী দিবসে বক্তারা।১৮ নভেম্বর সকাল দশটায় চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) ট্রাস্ট-এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও মাইজভাণ্ডারী একাডেমির উদ্যোগে ২ দিনব্যাপী ৭ম জাতীয় সুফি সম্মেলনের দ্বিতীয় দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। দিবসের প্রথম ও দ্বিতীয় একাডেমিক ‘সেশন চেয়ার’ হিসেবে ছিলেন যথাক্রমে চ.বি ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম শামীম এবং সাদার্ণ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ-এর উপ-উপাচার্য প্রফেসর এম. মহি উদ্দিন চৌধুরী।
দুটি সেশনে মোট ৯টি প্রবন্ধের মধ্যে ‘মাওলানা রুমি ও তার প্রেমদর্শন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চ.বি আরবি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. হাফেজ মুহাম্মদ নুর হোসাইন, ‘সামাজিক শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় সুফিদর্শন’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ্ ভূঁইয়া, ‘সুফিবাদ ও ভারতীয় উপমহাদেশ’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোহাম্মদ আশিকুর রহমান চৌধুরী, ‘তাওহীদে আদ্ইয়ান: একক সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসীগণের ঐক্যের অনন্য তত্ত্ব’ প্রবন্ধ উপস্থাপন লেখক-গবেষক আবদুল্লাহ মোহাম্মদ ইকবাল, ‘সুফিবাদ: বর্তমান বৈশ্বিক সংকট নিরসনে সুফিদর্শনের ভূমিকা’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ আসাদুজ্জামান, ‘উপমহাদেশে শান্তি সম্প্রীতি সুরক্ষায় দরবেশগণের ভূমিকা’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড ফার্মাকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. এস কে এম আজিজুল ইসলাম, ‘বহুত্ববাদী সমাজে ন্যায়পরতা প্রতিষ্ঠায় সুফি খানবাহাদুর আহছানউল্লা’র প্রাসংগিকতা: একটি দার্শনিক পর্যালোচনা’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক ড. মো. একরাম হোসেন, শান্তি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠায় সুফিবাদ’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আল্লামা সৈয়দ মাসুম কামাল আল আজহারী, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রামের বিখ্যাত সুফি সাধক’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নজিরিয়া নঈমিয়া মাহমুদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. হাফেজ আল্লামা মুহাম্মদ মহিউল হক।
সমাপনী সেশনে সুফিতাত্ত্বিক গবেষক ড. সেলিম জাহাঙ্গীর উপস্থাপন করেন ‘মাইজভাণ্ডারী গানে খোদাপ্রেম: একটি অণ্বিষ্ট পর্যবেক্ষণ’। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. এম সিকান্দার খান, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক এস এম মোস্তফা সরওয়ার। প্রফেসর সিকান্দার খান বলেন, সুফিরা নিজের স্বার্থ বড় করে না দেখে নিঃস্বার্থভাবে পরোপকার করার শিক্ষা দিয়েছেন। এরপর মাইজভাণ্ডারী একাডেমির সদস্য আরেফিন রিয়াদের সঞ্চালনায় ‘সুফি সংগীত’ পরিবেশন করেন ‘এস জেড এইচ এম ট্রাস্ট’ নিয়ন্ত্রণাধীন সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘মাইজভাণ্ডারী মরমী গোষ্ঠী’র শিল্পীরা। সবশেষে ৭ম জাতীয় সুফি সম্মেলন ২০২২ উদযাপন পর্ষদ আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন সমাপনী ভাষণ ও ট্রাস্ট সচিব অধ্যাপক এ ওয়াই এমডি জাফর-এর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মধ্য দিয়ে সুফি সম্মেলন সমাপ্ত হয়।