সুজন পোদ্দার:
কচুয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার টেস্টে ফেলকরা শিক্ষার্থীদের ফরমফিলআপ করাতে পুনঃ পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। পুনঃ পরীক্ষার নেওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে কচুয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায়, একটি ছোট কক্ষে প্রতি বেঞ্চে ৩জন করে বসিয়ে টেস্টে অকৃতকার্য হওয়ায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী গাধাগাধি করে পরীক্ষা দিচ্ছে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন একাই হল পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এসময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য কোন সহকারী শিক্ষক কিংবা কোন অফিস সহকারীকে বিদ্যালয়ে দেখা যায়নি। পরীক্ষার হলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে হলপর্যক্ষেক সহকারি শিক্ষক জাকির হোসেন তাদের উপর চটে যান এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। ইতিপূর্বে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁস সহ বিভিন্ন অনিয়মের উঠে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত টেস্ট পরীক্ষায় ১১৫জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। তন্মধ্যে ৫৮জন কৃতকার্য হয় এবং ৫৭ জন অকৃতকার্য হয়। পরবর্তীতে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের পাঠদানে অবনতির বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। অভিভাকদের প্রশ্নের মুখে শিক্ষকরা অকৃতকার্য ৫৭জন পরীক্ষার্থীকে ফরম ফিলআপ করানোর উদ্দেশ্যে নামমাত্র পুনঃ পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পরও বিধিঃ বর্হিভূতভাবে ফেল করা পরীক্ষার্থীদের এই পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে। এত বিপুল সংখ্যাক শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষা ফেল করায় আমরা বিস্মিত ও হতবাগ। এ বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান নিয়ে আমাদেরকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তারা আরো জানান, শিক্ষকরা শ্রেণি কক্ষে সঠিকভাবে পাঠদান না করায় এসকল শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গণিত, ইংরেজি, জীববিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। ফলে কচুয়ার ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টির সুনাম-সুখ্যাতি ক্রমান্বয়ে ¤øান হয়ে পড়ছে।
কচুয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২৩ সালে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একসাথে অর্ধশত শিক্ষার্থী ফেল করার কারন জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ মান্নান বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, যে সকল শিক্ষার্থীরা ফেল করেছে তাদের অভিভাবকদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দ্বিতীয় বার পরীক্ষা নিচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পরীক্ষার্থী জানায়, যারা গণিত, ইংরেজি, জীববিজ্ঞান ও রসায়নের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়েনি তাদেরকে ফেল করিয়েছে। যারা প্রাইভেট পড়েছে তাদেরকে আগের থেকেই প্রশ্ন কমন করে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান জানান, ফেল করা পরীক্ষার্থীদের পুনঃপরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টি এইমাত্র অবগত হয়েছি। ঘটনাটি সত্য হলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।