তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে চাচার বিরুদ্ধে শ্লীলতা হানি ও হত্যার চেষ্টা এবং বাড়ি ভাংচুরে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের চারদিন অতিবাহিত হলেও কোন মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। এতে করে ভিকটিমের পরিবার চরম নিরাপত্তা হীনতায় রয়েছেন। উপজেলার সরনজাই ইউনিয়ন(ইউপির) রায়তান আকচা গ্রামে গত সোমবার রাতে ঘটে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। এঘটনায় ভুক্তভোগী ভাতিজি আঙ্গুরা বেগম বাদি হয়ে চাচা ইদ্রিশকে বিবাদী করে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ওই অভিযোগ পাল্টিয়ে কৌশলে চাচাসহ তার পুত্রদের নামে অভিযোগ করিয়ে নেয় থানা পুলিশ বলে দাবি ভুক্তভোগীর। এমনকি রাতে এঘটনায় ভুক্তভোগী ৯৯৯ কল করলে পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে তার মাকে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দেন। এখবর জানতে পেরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আঙ্গুরা বেগমের পিতা রিয়াজকে বালিশ চেপে হত্যার চেষ্টা করে ভাতিজারা। পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে তাকেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেন। তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। ফলে থানা পুলিশের এমন ঘটনায় চরম বিব্রত ভিকটিম এবং ন্যায্য বিচার পেতে এসপির নিকট মৌখিক ভাবে অবহিত করেন।
ভুক্তভোগী আঙ্গুরা জানান, চলতি মাসের ২৬ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যার দিকে আমার গরুর বাছুর চাচা ইদ্রিশের ছাগলের পাতায় মুখ দেয়। যার কারনে চাচা চাচি অকাথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমি নিষেধ করলে জোরপূর্বক বাড়িতে তুলে কাপড় ছিড়ে শরীরের স্পর্শ কতর জায়গায় হাত দিয়ে শ্রীলতা হানি করে। আমি কোন রকমে বের হয়ে নিজেকে রক্ষা করি। আমার চাচা রাতে তার ছেলে রিপন ও সাদ্দামকে নিয়ে বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও আমার মাকে বেধড়ক পেটায়। মারপিটের ভয়ে আমার মা আমাদেরকে ঘরে বন্দি করে তালা দিয়ে বারান্দায় ছিল। তাদের মারপিটে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে যায় মা। আমি উপায় না পেয়ে ৯৯৯ কল করলে পুলিশ এসে উদ্ধার করে মাকে হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দেয়। আমি চাচার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে মঙ্গলবার থানায় ডেকে সেই অভিযোগ ছিড়ে ফেলে পুনরায় চাচা চাচি ও তার ছেলেদের নামে এবং ৪০০০ টাকার ক্ষতি বলে অভিযোগ দিতে বাধ্য করেন। আমি উপায় না পেয়ে পুনরায় ৯৯৯ কল করলে তারা এসপির কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী গত বুধবার এসপি স্যারকে ঘটনা জানিয়েছি। স্যার শুনে সকল ধরনের আইনি সহায়তা করার কথা বলেছেন। আবার গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে আমার পিতা রিয়াজ উদ্দিনকে বিবাদী রিপন ও সাদ্দাম বালিশ চেপে হত্যার চেষ্টা করে, থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলে তারা উদ্ধার করে মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দেন। বর্তমানে আমার পিতা রিয়াজ উদ্দিন ও মাতা মেডিকেলে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত বুধবার সরেজমিনে রায়তান আকচা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মসজিদের দক্ষিন পূর্ব দিকে বাদী বিবাদীদের বসত বাড়ি। মাঝে কয়েক হাত দুরুত্ব। সেখানে ছিলেন বাদীর স্বামী ও তার ভাই। তাদের সাথে কথা বলা শুরু করলে বিবাদী ইদ্রিশের স্ত্রী আলেক বিবি ও মেয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আঙ্গুরা আমাদেরকে মেরে উল্টো বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল করে পুলিশ নিয়ে এসেছিল। আমার স্বামী ইদ্রিশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অবশ্য আঙ্গুরার টিনের বাড়ি ভাংচুর দেখা যায়। সেখান থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে কথা বলা হয় বয়োজ্যেষ্ঠ রিয়াজের সাথে তিনি জানান, রাতে শুয়ে থাকা অবস্থায় বালিশ মুখে চেপে ধরে। আমি শুধু একবার চিৎকার করতে পারি, তারপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছি। আমাকে মৃত বলে ফেলে তারা চলে যায়। হাসপাতালে এসে কয়েক ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরে পায়। বিষয়টি নিয়ে তানোর থানার ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, এসআই জাহাঙ্গীর কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সে ভোট ডিউটিতে আছে, ফিরে আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারোয়ার হোসেন
২৯ ডিসেম্বর /২০২২ইং