হামলা ও ছিনতাইয়ের শিকার শত শত যাত্রী, থানায় অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:
চাঁদপুর টু চট্টগ্রাম রেলপথে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সাধারণ যাত্রীরা। বর্তমানে এসব পাথর নিক্ষেপকারীদের তান্ডবে যাত্রীরা নিদারুন উৎকণ্ঠার মধ্যে যাতায়াত করছে বলে যাত্রী সূত্রে জানাযায়। কোনভাবেই এসব পাথর নিক্ষেপকারী দুস্কৃতিকারীদের নিভৃত করতে পারছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ভয়াবহ এই পাথর নিক্ষেপের কারণে অনেক যাত্রী এখন পঙ্গুত্বের জীবন যাপন করছে বলে জানা যায়। আহত বেশ কয়েকজন যাত্রীর সাথে আলাপ করলে তারা জানান, বেশ কিছু দিন থেকেই চাঁদপুর-চট্টগ্রাম যাতায়াতকারী অনেকেই এই পাথর নিক্ষেপকারীদের শিকারে পরিনত হয়েছেন। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা করার কারণে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
গত ৭ মার্চ চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর ট্রেন মেঘনা এক্সপ্রেস ৭২৯ ফেরার পথে পাথর নিক্ষেপ ও ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন বেশ কয়েকজন যাত্রী। এর মধ্যে চাঁদপুর জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচীব কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল একই ট্রেনে তার ভগ্নিপতিকে নিয়ে চাঁদপুরে ফিরছিলেন। ঐ যাত্রির টিকিট নম্বর ঈঞএ০১১৬৪২৯৮। তিনি জানান ট্রেনটি চাঁদপুরের মৈশাদী রেল স্টেশনে আসলে একদল সন্ত্রাসী ট্রেন যাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এসময় এক নারী যাত্রীরও মোবাই ছিনিয়ে নেন বলে তিনি জানান। এরপর ট্রেনটি মৈশাদী স্টেশন পার হয়ে সামনে এগুতে থাকলে চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস এলাকা, গুচ্ছগ্রাম ও দর্জিঘাট এলাকায় আসলে বিক্ষিপ্তভাবে পাথর নিক্ষেপ করতে থাকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা। এসময় নারীসহ প্রায় ৫জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। এরমধ্যে একটি পাথর এসে কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলের পায়ে এসে আঘাত করে। এতে তিনিও মারাত্মভাবে আহত হন। ঐঘটনায় আহত যাত্রী কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল গতকাল ৯ মার্চ বৃহস্পতিবার চাঁদপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। সাধারণ ডায়েরীতে তিনি এহেন ভিতিকর পরিস্থিতি ও যাত্রিদের নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধনের এবং সমূহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও অজ্ঞাত ঐ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রাশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান।
এদিকে একই পরিস্থিতির শিকার চাঁদপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াছ চাঁদপুর সময়কে জানান, কিছুদিন পূর্বে তিনিও একই পরিস্থিতির শিকার হয়ে পাথরের আঘাতে মারাত্মকভাবে আহত হন। রেলওয়ের যাত্রীদের এমন নিরাপত্তাহীনতার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আহবান জানান। তিনি বলেন, এই রুটে প্রতিদিন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। এসব যাত্রীদের উপর এভাবে পাথর হামলা ও ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ায় রেলওয়ের পাশাপাশি চাঁদপুরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। তাই চাঁদপুরের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও এব্যাপারে আরও তৎপর হওয়ার আহŸান জানান তিনি।
তাছাড়া রেলওয়ের যাত্রীদের উপর সাম্প্রতিক সময়ের হামলার ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানার ওসি আব্দুর রশিদ চাঁদপুর সময়কে বলেন, এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। রেল পথে যাতায়াতে যাত্রীদের নিরাপত্তায় নৌ পুলিশের পাশিপাশি ইতিমধ্যে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এই রুটে যাতে সাধারণ মানুষ নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারে সেই জন্য সকল দুস্কৃতিকারীকে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতিমধ্যে যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে আমরা আশ^স্ত করেছি ঐসব দুস্কৃতিকারীকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
এদিকে ট্রেনে নিয়মিত যাতায়াতকারী কয়েকজন যাত্রীর সাথে আলাপ করে জানাযায়, বর্তমানে চাঁদপুর-চট্টগ্রাম টেন যাতায়াত অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে চলন্ত ট্রেনে প্রায়ই পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রীরা হতহতা হলেও রেল কর্তৃপক্ষের সেদিকে কোন ভ্রæক্ষেপ নেই। তাদের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না কোন যাত্রী। যার কারণে দুস্কৃতিকারীরা বার বার একই ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়া রেলওয়েতে ছিনতাইকারীও বেশ সক্রিয় বলে জানা যায়। বিশেষ করে প্রতিটি স্টেশনে দুস্কৃতিকারীরা সব সময় ওঁৎপেতে বসে থাকে। সুযোগ পেলেই যাত্রীদের মোবাইল, ঘড়ি, হাত ব্যাগ, নগদ অর্থ সম্পদ কেড়ে নিয়ে দ্রæত পালিয়ে যায়। এসবয় ঐসব দুস্কৃতিকারীরা যাত্রীদের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে আহত করে। যাত্রীরা জীবনের ভয়ে সব কিছু দিয়ে দেয়। এ ব্যাপারে রেল পুলিশের তৎপরতা না থাকার কারণে দিন দিন এসব ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।
তাই সাধারণ যাত্রীরা ট্রেনের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জণ্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার আহবান জানান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (সকাল ১১:৪১)
  • ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১