ঠাকুরগাঁওয়ে জাল সীল-সাক্ষরে চাকুরী দেয়ার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁওয়ে জাল সীল-সাক্ষরে চাকুরী পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারই প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষিকা রিনা আক্তার। আজ সোমবার (২২মে) দুপুরে জেলা শহরের একটি রেস্টুরেস্টে সংবাদ সম্মেলনে করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যপাঠ করে সহকারি শিক্ষিকা রিনা আক্তার বলেন, জেলা সদরের চিলারং ইউনিয়নের আরাজী পাহাড়ভাঙা আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজস ও শিক্ষা অফিসারের সীল সাক্ষর জাল করে আব্দুর সবুরকে চাকুরী পাইয়ে দেয়।

তিনি আরো বলেন, ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বরে নিয়োগের পর ২৮ ডিসেম্বর ওই স্কুলে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করি। ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমি চাকুরী করে আসছিলাম। উক্ত স্কুলের ৩০০ ফিটের মধ্যে আরেকটি স্কুল হওয়ায় আরাজী পাহাড়ভাঙ্গা বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আরাজী পাহাড়ভাঙ্গা আদর্শ বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করাকে নিয়ে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দবিরুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসিরুল ইসলাম ও আমিসহ চারজন শিক্ষকের নামে সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ঠাকুরগাঁওয়ে মামলা দায়ের করেন।

২০১৭ সালের ২৩মার্চ আরাজী পাহাড়ভাঙ্গা আদর্শ বে-সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারীকরণ করা হলে পরবর্তীতে আমি স্কুলে গেলে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু আমাকে স্কুলে প্রবেশে বাধা দেয়।

বাধা প্রদানের কারন জানতে চাইলে তারা জানান আপনাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন অব্যাহিত দেওয়া হলো এই মর্মে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করি।

অভিযোগটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে আমাকে অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়।

পরবর্তিতে নিরুপায় হয়ে ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরের ঠাকুরগাঁও সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু, সভাপতি নাসিরুল ইসলাম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুল ইসলাম, বিতর্কিত শিক্ষক আব্দুর সবুর, কমিটির সদস্য কুতুব আলী, সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ ২২জনের বিরুদ্ধে মামলা করি।

মামলা করার পর জানতে পারি উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু, আজিজা বেগম, রিতা আক্তার, আব্দুর সবুর আদালতে যে নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্র জমা দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ ভুয়া। তাদের নিয়োগপত্র ও যোগদানপত্রে যে সীল ও সাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে তা উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম এর নয়। প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতির যোগসাজসে তারা সীল ও স্বাক্ষর জাল করেছে।

আদালতে ২০০৪ সালের ৮এপ্রিল প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু, আজিজা বেগম উক্ত স্কুল নিয়োগ কমিটির সদস্য দেখালেও সাত দিন পর তারাই নিয়োগ পায়। শিক্ষা অফিসারের সীল-স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি আমি চলতি বছরের ২২মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করে কোন সমাধান না পেয়ে আবারো ৭-মে একই দপ্তরে পুন:রায় অভিযোগ করেছি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন সুরহা পাচ্ছি না।

রিনা আক্তার আরো বলেন, আমার মামলার আসামীরা আদালতে জবানবন্দীতে জানায় যে রিনা আক্তার স্বেচ্ছায় সহকারী শিক্ষিকা পদ থেকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু তারা আমার সেচ্ছায় অব্যাহতির কোন কাগজপত্র আদালতে দেখাতে পারেনি। পরে আদালত আমার নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্র সত্য বলে জানান। কিন্তু পরবর্তীতে সাক্ষীর ভুল বক্তব্যে আদালত আমার মামলাটি খারিজ করে দেন। যা আমি উচ্চ আদালতে আপীল করি এবং তা চলমান রয়েছে। তাই আপনাদের মাধ্যমে সঠিক বিষয়টি তুলে ধরার মাধ্যমে ন্যায্য বিচার পাবো বলে আশা করছি।সংবাদ সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মনসুর রহমান জানান, মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আমরাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (বিকাল ৫:০৪)
  • ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৮ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১