স্টাফ রির্পোটার।। চাঁদপুর পৌরসভার ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। ১৪ জুলাই শুক্রবার বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বাজেট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।এসময় তিনি বলেন,আমরা যারা জনপ্রতিনিধি রয়েছি তাদের যে জনগণের প্রতি জবাবদিহিতা ও দায়িত্ব রয়েছে । তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আজকের অনুষ্ঠান।এমন অনুষ্ঠান এই পৌরসভায় আগে দেখিনি। প্রায় ৫০ কোটি টাকা দেনা নিয়ে এই পরিষদ দায়িত্বে এসেছিলো। ইভিএমের মাধ্যমে আমাদের ১৫ জনের মধ্যে ১৪ জন কাউন্সিলর বিপুল ভোট পাশ করেছিল। আর মেয়র সাহেবতো বিশাল ভোটে জয়লাভ করেছে।আর তার সাথে যে নির্বাচন করেছে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।তারমানে মেয়রকে পৌরবাসী একক ভাবে সমর্থন দিয়েছে।মেয়রসহ কাউন্সিলররাও কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তারা যত ঋন ও বকেয়া ছিলো তা পরিশোধ করতেছে।দেনা পরিশোধ করার জন্য কিন্তু উন্নয়ন কাজ বন্ধ রাখেনি।তারা প্রথমে অবহেলিত এলাকা গুলোতে উন্নয়ন শুরু করেছে।আমরা উন্নয়ন যেমন চাই তেমনি জনপ্রতিনিধিদের কাছে সেবাও চাই।
তিনি বলেন, চাঁদপুর পৌরসভা গতানুগতিক কাজের বাইরে কিছু ব্যতিক্রমী কাজ করেছে।৩ টি বই বের করেছে। মেয়র ও তার পরিষদ দেনা পরিশোধ না করা পর্যন্ত বেতন নেয়নি।আমাদের অনেকেরই এই সৎ সাহস নেই।একটা উদাহরণ সৃষ্টি করেছে চাঁদপুর পৌরসভা।বৃটিশ হাইকমিশনারও এই পৌরসভার উচ্চশিত প্রশংসা করেছে।আশা করছি শিশু পার্ক খুব শিগগিরই হবে।একটা কথা আছে সকালটাই বলে দেয় দিনটা কেমন যাবে। আমাদের মেয়ের ও তার পরিষদ জানান দিয়েছে বাকী সময়ে তার পরিষদের সময়ে কেমন যাবে। আমাদের এসবি খাল উদ্ধার করে হাতির ঝিলির আলোকে গড়ে তোলার একটা পরিকল্পনা রয়েছে। রিভার ড্রাইভের কথা হচ্ছে।সবকিছু মিলিয়ে ব্যাপক কাজ হয়েছে আরো হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, আমরা পৌর পরিষদকে ভোট দিয়েছি।তারমানে এই নয় যে আমাদের কাজ শেষ হয়ে গেছে।আমাদের পরিবেশ ও সমাজকে সুন্দর রাখতে হলে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। নিজেদের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর সমাজ বিনির্মানের জন্য আমাদের দায়িত্ব পালন করতেই হবে। এখন ডেঙ্গুর একটা প্রকুট প্রভাব দেখা দিয়েছে। কাজেই আমাদের আরো বেশি সজাগ হতে হবে। বর্তমান পরিষদকে বলবো আপনারা আপনাদের কাজ চালিয়ে যান।আমরা আপনাদের পাশে আছি।
সভার শুরুতে ২০২৩ -২০২৪ অর্থ বছরের জন্য মোট ১১৪ কোটি ২৪ লাখ ১৬ হাজার ২শত ১৯ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন পৌর মেয়র অনুষ্ঠানের সভাপতি অ্যাড. জিল্লুর রহমান জুয়েল।এসময় মেয়র বলেন,আমরা পৌরসভার বিভিন্ন খাতে দেনা ও সমস্যা কাদে নিয়ে কিন্তু দায়িত্বে আসি।বিদুৎ খাতসহ বেশ কয়েকটি খাতে বড় একটি দেনা ছিল।এই দেনার পরিমান ছিলো প্রায় ৫০ কোটি টাকা।এর বাইরে আরো একটি দেনা ছিল। সেটি ছিলো রিটার্ড কর্মকর্তাদের এককালীন টাকা। কিন্তু ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ২২ হাজারের কিছু বেশি টাকা । আমরা পৌরসভার ইতিহাসে প্রথম পৌর কর্মকর্তা কর্মচারীদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করি।আমাদের পরিষদের ২ বছর ৮ মাসে কোন বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখিনি।আমাদের আগে রাজস্ব খাতে বাজেট ছিল ২৫ কোটি এখন আমরা দিচ্ছি ৪৪ কোটি টাকা। আমাদের আগে পানি খাতকে লাভ জনক দেখানো হতো।কিন্তু আমরা যখন দায়িত্ব নিলাম তখন দেখলাম এটা লচ খাত।তখন আমরা এই খাতে লচ কাটিয়ে উঠার সিদ্ধান্ত নেই।আমরা বর্তমান পরিষদ নিজস্ব অর্থায়ন থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকার কাজ করিয়েছি।চাঁদপুর পৌরসভার ইতিহাসে এরকম উন্নয়ন কখনোই হয়নি।আমরা এই সময়ে অবহেলিত এলাকা গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছি। এখন আমাদের মনোযোগ থাকবে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী নান্দনিক পৌরসভা গড়ে তোলা।বাকী সময়টুকুতে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারের ষোল আনা পূর্ণ করবো। এসময় মেয়র বিভিন্ন খাতের আয় ও ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।
চাঁদপুর পৌরসভার কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বাবু পাটওয়ারীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন,চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, শাহরাস্তি পৌরসভার মেয়র হাজী আব্দুল লতিফ । শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী মাঝি।
এছাড়াও এদিন পৌরসভার ৬ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ৩৪ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়।
সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন তেলওয়াত করেন চাঁদপুর পৌরসভার ইমাম হাফেজ জাকির হোসেন,গীতা পাঠ করেন চন্দন।