শ্রম কল্যান কেন্দ্র নিয়ে প্রকাশিত ভিডিও সংবাদের প্রতিবাদ প্রসঙ্গে

 

উপযুক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, গত ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ইং তারিখে বিকালে আইএনএন টিভির ফেসবুক একাউন্টে ‘চাঁদপুর শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রে ডাক্তারের দু”র্নী”তি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত শ্রমিকরা #’ শিরোনামে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয় (ভিডিও লিঙ্ক: https://www.facebook.com/share/v/Nk9bvYYWYrUDyKTx/?mibextid=qi2Omg) যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা বানোয়াট তথ্য। ওই রিপোর্টে আমার নাম যেভাবে যুক্ত করে প্রকাশিত হয়েছে তাতে আমার পেশাগত সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। এ ধরনের কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ মানহানিকর।

(০১) উক্ত ভিডিওতে বলা হয়েছে ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসার যোগদানের ৬ মাসেও কোন রোগী দেখেন নাই। প্রকৃতপক্ষে এর কোন ভিত্তিই নেই। ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসার ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এ ১০২ জন, মার্চ ২০২৪ এ ৪১৯ জন, এপ্রিল ২০২৪ এ ১৫ জন, মে ২০২৪ এ ১০ জন, জুন ২০২৪ এ ২৭০ জন, জুলাই ২০২৪ এ ১৭ জন এবং আগষ্ট ২০২৪ এ ৩২০ জনকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছেন, যার সুস্পষ্ট প্রমান অফিসের চিকিৎসা সেবা খাতায়, মাসিক প্রতিবেদন রিপোর্ট, বিভিন্ন অনলাইন নিউজ, ফেসবুক ও ওয়েবসাইটের পোস্টে রয়েছে।
(০২) উক্ত ভিডিওতে বলা হয়েছে ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসারকে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪ পর্যন্ত অফিসে বসে চিকিৎসা সেবা দিতে হবে। কিন্ত ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসারকে চিকিৎসা সেবা ছাড়াও প্রশাসনিক কার্যাবলী, শ্রমিক প্রশিক্ষণ এবং শ্রমিকদের কলোনি পরিদর্শন করতে হয়, যার বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে অফিসের সিটিজেন চার্টারে উল্লেখ করা রয়েছে। এসকল যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে মেডিকেল অফিসারকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন স্থানে গমন করতে হয়। চিকিৎসা সেবা মেডিকেল অফিসারের কাজের একটা অংশ মাত্র। আর তাছাড়াও মেডিকেল অফিসার অফিসের বাহিরেও বিভিন্ন ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করছেন যেখানে তিনি শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ প্রদান করতেছেন। মেডিকেল অফিসারের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি শুধু চাঁদপুরের পুরানবাজারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, সমগ্র চাঁদপুরেই মেডিকেল অফিসারের কার্যক্রমের ব্যাপ্তি। চাঁদপুর সদর উপজেলার বাহিরের একজন শ্রমিকের পক্ষে তার পকেটের টাকা খরচ করে পুরানবাজারে আসা খুবই কঠিন। কারণ আসা যাওয়ায় শ্রমিকের ২০০-৩০০ টাকা চলে যায়। এজন্য মেডিকেল অফিসার নিজ উদ্যেগে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করেছেন ইতিমধ্যে। এছাড়াও সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী মেডিকেল অফিসার চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে শ্রমিকদের কলোনিসমূহ পরিদর্শন করছেন। বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে গিয়ে বা কোথাও বসে শ্রমিক মালিক উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করছেন। এসব কাজ বাস্তবায়ন করতে গেলে প্রতি কর্মদিবসে অফিসে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত থাকা সম্ভব নয়। ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর অফিসিয়াল ফেসবুক একাউন্ট (https://www.facebook.com/lwcchandpur.ddo?mibextid=ZbWKwL) এবং ওয়েবসাইটে (http://lwc.sadar.chandpur.gov.bd/) অফিসের যাবতীয় কার্যক্রমের তথ্য প্রতিনিয়ত আপলোড করা হচ্ছে। শ্রমিকদের সুবিধা ও স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসার সরকারি ছুটির দিনগুলোতে এবং অফিস সময় শেষ হবার পরেও প্রোগ্রাম করছেন। কখনো কখনো রাত ১০টা/১১টা পর্যন্তও অফিসে সময় দিচ্ছেন মেডিকেল অফিসার, যার প্রমান অফিসের সিসি ক্যামেরাতে রয়েছে। অতি সম্প্রতি ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসার চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলা, মতলব দক্ষিণ উপজেলা, চাঁদপুর সদর উপজেলা ও ফরিদগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন প্রোগ্রাম করেছেন, যেখানে সম্মানিত ইউএনও, পুলিশের ওসি, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার, সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তারা উক্ত কর্মসূচীতে উপস্থিত থেকে শ্রমিকদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করছেন, যেটা ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর অফিসে বসে থেকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।
(০৩) উক্ত ভিডিওতে বলা হয়েছে মেডিকেল অফিসার প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখছেন। এই কথাটিরও কোন ভিত্তি নেই। পুরানবাজারে অবস্থিত ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর অফিসটি তুলনামূলকভাবে শহরের থেকে একটু সাইডে পড়ে যাওয়ায় শ্রমিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাবৃন্দ আলোচনা ও চিকিৎসার জন্য দূরে আসতে চান না। এজন্য চাঁদপুর সদরের শহরের কোথাও আলোচনা করতে চাইলে চাঁদপুর শহরের কোন সুবিধাজনক স্থানে বসে আলোচনা করা হয়, হোক সেটা যে কোন খাবারের হোটেল অথবা মেডিকেল অফিসারের নিজ বাসায় অথবা নিজ প্রাইভেট চেম্বারে বা অন্যকোন সুবিধাজনক স্থানে। উল্লেখ্য যে, মেডিকেল অফিসারকে তার যাবতীয় কার্যক্রমের জন্য অফিসে বাহিরে যেতে হয় বিধায় ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর অফিসে এসে কেউ যাতে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেজন্য একটি মোবাইল নম্বর চালু করা (০১৮৯৭০৯৫৭১২) করা হয়েছে, যেটার মাধ্যমে শ্রমিকরা চিকিৎসা সেবার জন্য একদিন আগে ফোন দিয়ে সিরিয়াল গ্রহন করেন এবং তাদেরকে জানিয়ে দেওয়া হয় কখন কবে তারা চিকিৎসা সেবা গ্রহন করতে আসতে পারেন। উক্ত মোবাইল নম্বর ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর শ্রম সংগঠক জনাব হযরত আলীর দায়িত্বে রয়েছে। কেউ অফিসে এসে সরাসরি জনাব হযরত আলী বা অফিসের অন্য কর্মকর্তা কর্মচারীর কাছেও সিরিয়াল দিয়ে যেতে পারেন। আবার মোবাইলে ফোন দিয়েও সিরিয়াল দেওয়া যায়। এই বিষয়ে সিটিজেন চার্টারে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। অফিসের দেয়ালে সিটিজেন চার্টার লাগানো আছে এবং ওয়েবসাইটেও আপলোড করা রয়েছে।
(০৪) উক্ত ভিডিওতে বলা হয়েছে যেদিন নিউজটি প্রকাশিত হয়েছে, চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য ঐদিন বিভিন্ন মানুষজন অফিসে এসেছিলেন এবং চিকিৎসা সেবা না পেয়েই ফিরে গিয়েছেন। কিন্ত ঐদিন কেউই অফিসে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন নাই, যার প্রমান অফিসের সিসি ক্যামেরাতে রয়েছে। আর তাছাড়াও ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর জন্য কিছু মেডিকেল যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য মেডিকেল অফিসার গত বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ইং তারিখে ঢাকায় গমন করেন এবং এই বিষয়ে ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসার গত বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ইং তারিখে দুপুর ২.২০ ঘটিকায় ‘বিভাগীয় শ্রম দপ্তর, নারায়ণগঞ্জ’ এর অফিসিয়াল মেইলে একটি মেইল পাঠান যেখানে তিনি উল্লেখ করেন,
“উপযুক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে, শ্রম অধিদপ্তরের অধীন শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র সমূহের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট বন্টনে ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর জন্য স্বাস্থ্যবিধান সামগ্রী খাতে (কোড নং: ৩২৫২১০৮) ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। স্বল্পমূল্যে ভালো জিনিস ক্রয়ের ক্ষেত্রে ঢাকায় গিয়ে সরাসরি দেখে ও যাচাইবাছাই করে জিনিস ক্রয়ের কোন বিকল্প নেই। এই লক্ষ্যে আগামী ১২-০৯-২০২৪খ্রি. তারিখে ঢাকায় গমন করতে ইচ্ছুক। পত্রটি মহোদয়ের সদয় অবগতির জন্য প্রেরণ করা হলো।”
এর সুস্পষ্ট প্রমান সংযুক্ত করা হয়েছে। অতএব, এটা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে মেডিকেল অফিসার উক্ত দিন ঢাকায় গমন করেন। উক্ত সাংবাদিক মেডিকেল অফিসারকে ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাও করতে পারতেন। কিন্ত সাংবাদিক মেডিকেল অফিসারকে কোন ফোন না দিয়েই নিজের মনের মত করে নিউজ করেছেন।
অনলাইন চ্যানেল আইএনএন টিভির ভুল তথ্য প্রকাশের ফলে ‘শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর’ এর মেডিকেল অফিসার সম্পর্কে সাধারণ জনগনের মধ্যে সৃষ্ট নেতিবাচক ধারণা নিরসনে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা জরুরি বলে মনে করি। তাই যথাযথ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সংশোধনী প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হচ্ছে।

 

 

(মুহাম্মদ মেহেদী হাসান)
মেডিকেল অফিসার
শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র, চাঁদপুর।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শনিবার (বিকাল ৪:০৫)
  • ১২ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৯ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৭শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১