বীরগঞ্জ শাখা কার্যালয়ে ২৭ মে শুক্রবার সকাল ১০ টায় মুসলিম এইড বাংলাদেশ এর ডিরেক্টর অপারেশন্স মোঃ আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিনাত রেহানা।
রংপুর অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোঃ ফরজ আলীর পরিচালনা কর্মশালায় বিশেষ অতিথি এবং প্রধান ট্রেইনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ওসমান গনি (শিশির)।
২০০৫ সালে বীরগঞ্জ উপজেলার হাবলুহাটে শিক্ষা কার্যক্রম ও মৎসচাষ কার্যক্রম সহ মানবিক বিভিন্ন সহায়তামূলক কার্যক্রম শুরু করে। বীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মুসলিম এইড বাংলাদেশ এর বিভিন্ন ধরণের সেবা পাওয়া প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে প্রায় ৫০ জন প্রশিক্ষনার্থী অংশগ্রহণ করেন এই কর্মশালায়।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন মুসলিম এইড বাংলাদেশ জন্মলগ্ন থেকে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক এবং জরুরী দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা, বস্ত্রবিতরণ, সুদ বিহীন ক্ষুদ্র লোন কার্যক্রমের মাধ্যমে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে আসছে। আজকের প্রয়াস তারই ধারাবাহিকতা এবং আমি প্রত্যাশা করবো মুসলিম এইড বাংলাদেশ এরুপ কর্মসূচীর ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে দেশের কৃষি খাতের উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে। আমি এ সংস্থার উত্তোরত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
সভাপতি মোঃ আরিফুল ইসলাম সমাপনী বক্তব্যে বলেন, এরুপ প্রশিক্ষনের মাধ্যমে এলাকার অবহেলিত চাষীদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের পথ তৈরী হবে এবং দারিদ্রতা দূরীকরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য এবং এরুপ আরো কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য এলাকার সকলের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন এবং সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
দিনাজপুরে একই সাথে ৪০ জন পিতামাতাহীন
এতিম মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত, অতিথি ১২শ
দিনাজপুর প্রতিনিধি ঃ জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি মহৎকাজে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যৌতুক আমাদের সমাজে একটি ব্যাধী। এই ব্যাধী থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। বর্তমান যে ৪০ জন ছেলে যৌতুক ছাড়াই বিয়ে করেছে এতিম কন্যাদের সারাদেশে এটি দৃষ্টান্ত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতিমদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছেন। তাদের স্বাবলম্বী করতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছেন। ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত দিনাজপুর শিশু নিকেতন এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ শতাধিক এতিম মেয়েকে বিয়ে দিয়েছে।
২৭ মে শুক্রবার দুপুরে দিনাজপুর গ্রীণ ভিউ কমিউনিটি সেন্টার প্রাঙ্গনে দিনাজপুর লায়ন্স ক্লাব, শিশু নিকেতন এবং সমাজসেবা অধিদপ্তরের আয়োজনে একই সাথে ৪০ জন পিতামাতাহীন এতিম মেয়েকে বিয়ের অনুষ্ঠানে স্বামীর হাতে তুলে দেওয়া বিবাহোত্তর বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি এসব কথা বলেন।
দিনাজপুর লায়ন্স ক্লাবের অধীনে শিশু নিকেতনের নিবাসী এতিম মেয়েদের যৌতুক বিহীন বিয়ের আয়োজন করে লায়ন্স ক্লাব। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এতিম কন্যাকে তুলে দেওয়া হলো স্বামীদের হাতে। আলোকসজ্জা, গেট, ষ্টেজ, ভিডিও, ব্যান্ডপাটি কোন কিছুই কমতি ছিল না দিনাজপুর শহরের গ্রীনভিউ কমিউনিটি সেন্টারে। কমিউনিটি সেন্টারকে সাজানো হয়েছিল রংবেরং বেলুন দিয়ে সাজ সজ্জার পাশাপাশি বরযাত্রীসহ আমন্ত্রিত প্রায় ১২শ অতিথির মধ্যে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
বিয়ের অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা জয়নুল আবেদীন, জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবু বকর সিদ্দিক, দিনাজপুর চেম্বারের সভাপতি রেজা হুমায়ুন চৌধুরী শামীম, দিনাজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মর্তুজা আল মুঈদ, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বরুপ বকসী বাচ্চু, শহর সমাজসেবা অফিসার মাইনুল ইসলাম, করতোয়ার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, লায়ন্স ক্লাবের প্রেসিডেন্ট লায়ন সৈয়দ মিজানুর রহমান, জোন চেয়ারম্যান (ক্লাবস) লায়ন মোজাফফর আলী মিলন প্রমুখ। সঞ্চালনে ছিলেন লায়ন এ্যাড. আব্দুল মজিদ। এ ছাড়া আরও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শহরের ফুলবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় লায়ন্স ক্লাবের পরিচালনায় শিশু নিকেতন হোম। এখানে ১০১ জন এতিম শিশু কন্যা লোখাপড়ার পাশাপাশি হাতের কাজ, সেলাই এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে। এদের মধ্যে ৪০ জন এতিম কন্যার আজকে দুম-ধাম ও উৎসব মুখর পরিবেশে বিয়ে দেওয়া হলো। ৪০ জন পাত্র ছিলেন দিনাজপুরসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার। পাত্ররা কেউ ব্যবসায়ী, কেউ গার্মেন্টস চাকুরী করেন, কেউ কৃষিকাজ আবার ওয়ার্কসপের দোকান করেন।
দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার বোয়ালদার গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক টেলরস দোকান রয়েছে। বিনা যৌতুকে শিশু নিকেতন হোমের এতিম কন্যা লিজা আক্তারকে বিয়ে করেছেন।
রাজ্জাক বললেন, আজকে আমার মত ৪০ জন ভাই যৌতুক না নিয়ে এতিম মেয়েদের বিয়ে করে উদাহারন সৃষ্টি করেছেন। আমরা যেন সুখী হতে পারি সকলের কাছে দোয়া চাই।
নতুন জীবন ও ঠিকানা পেয়ে খুশি রাজবাটি এলাকার ধানচাল ব্যবসায়ী তহিনুর ইসলামের নববিবাহিতা এতিম কণ্যা হুমায়ারা উম্মুল। হামজাপুর গ্রামের ছেলে মোঃ রবিউল ইসলামের বাবা রায়হানুল ইসলাম বললেন যৌতুক ছাড়াই আমার ছেলেকে বিয়ে দিয়েছি। আমি চাই সব অভিভাবক এই কাজটি করুক।
আয়োজক শিশু নিকেতনের সভাপতি মোজাফর আলী মিলন জানান এই শিশু নিকেতন থেকে প্রতিবছর মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হয়। এবার এক সঙ্গে ৪০ জন এতিম মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হলো। সাইকেল, সেলাই মেশিনসহ সংসারের প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র দেওয়া হয়েছে।
মোঃ নাজমুল ইসলাম (মিলন)
দিনাজপুর প্রতিনিধি