মাদক ও মানবিকতা সঙ্কট- মাহাবুবুর রহমান সেলিম

 

উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দুই হাজার একচল্লিশ সালের মধ্যে, বাংলাদেশ একটি আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তারই বাস্তবায়নে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এগিয়ে চলছে আমাদের এই সরকার। দেশে খাদ্যের অভাব নেই। নেই কোন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাব। আবার আমাদের মধ্যে পারিবারিক মূল্যবোধ ও সামাজিকতাবোধ যা একটি উন্নত রাষ্ট্রের পরিচয় বহন করে, তার‌ই পেক্ষাপটে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে আজকের এই তরুণ প্রজন্ম। আমাদের দেশের অভ্যুদয় হয়েছিল একটি সুন্দর স্বপ্ন নিয়ে। ইতিহাস, ঐতিহ্য ও প্রকৃত সংস্কৃতিকে ধরে রাখা এবং আধুনিক চিন্তা ও মনন শক্তি দিয়ে। সেই সাথে বেকারত্ব ও গোড়ামী মুক্ত বাংলাদেশ গঠন। তরুণেরা সৃষ্টিশীল এবং দেশপ্রেমিক তাই আমাদের সামনে যে বিষয়টা সবচাইতে জরুরি তাহলে যুবসমাজকে সর্বক্ষেত্রে মাদক মুক্ত রাখা। অন্যদিকে মাদক ব্যবসায়ীদের মূল টার্গেট হচ্ছে নতুন তরুণ প্রজন্ম। তারা অতি সহজেই দ্রুত টাকা উপার্জনের এক ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত থাকে। ঔষধ ঋষি
ষৌ যুবসমাজের অভ্যন্তরে গড়ে তুলছে প্রতিনিয়ত এক বিশাল নেটওয়ার্ক। সমাজের প্রতিটি পরিবারের থাকে একটা সুন্দর স্বপ্ন, বিশেষ করে তাদের সন্তানদেরকে নিয়ে আর তাদের এই সুন্দর আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ভেঙ্গে চুরমার করে এই ঘৃণ্য অর্থলোলুপ এই মাদক ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি করোনাকালীন সময় সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তরুনরা হয়ে পরে অসহায় ও হতাশাগ্রস্ত। এবং অনেক সময় তাদের অতি কৌতূহল দৃষ্টিভঙ্গি মাদকের নিকটে টেনে আনতে সক্ষম হয়। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র‌ই মাদকের ছড়াছড়ি এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে তার আশঙ্কাজনক বিস্তার, সবচাইতে ভয়ের জায়গাটা হচ্ছে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাদকের জড়িয়ে পড়ার প্রতি দুঃখজনক প্রবণতা। সংকটের মেঘ ঘনীভূত, উৎকণ্ঠিত জাতি মাদকের করাল গ্রাসে। বর্তমান সামাজিক অপরাধের মুল হোতা হচ্ছে মাদক। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায়, নৈতিক শিক্ষা, খেলাধুpলা সহ সকল সাংস্কৃতিক চর্চা সীমিত হওয়ার কারণে এমনটি পরিলক্ষিত হয়। একটা সময় এই
কোমলমতি তরুণ-তরুণীরা সঙ্ঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে এবং রীতিমত তারা সামাজিক অঙ্গনে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
তাই এসব সমস্যা সমাধানে সমাজের সকল নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে হবে। পরিবার, স্কুল কর্তৃপক্ষ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অতি আন্তরিকতার সাথে সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে, একটা কার্যকরী সিদ্ধান্তে অবতীর্ণ হবেন। যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে সবাইকে চলতে হবে দেশ ও জাতির নবপ্রজন্মের কল্যাণ সাধনে। বিজ্ঞানের বিকাশ আধুনিক প্রযুক্তি, এবং নব উদ্ভাবন, আমাদের নতুন পথ চলতে ব্যাপক উৎসাহ যোগাবে। নতুন প্রজন্মের সন্তানদের মাদক, নেশা ও অপসংস্কৃতি থেকে দূরে রেখে খেলাধুলার চর্চার মাধ্যমে নৈতিকতাবোধ ও শৃঙ্খলতা বোধ সর্বোপরি আমাদের এই প্রজন্মকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে। ক্যাসিনোর চাইতেও অধিক মানবিকতার সংকট তৈরি করছে এই মাদক। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মাদককে জিড়ো টলারেন্স ঘোষণা একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। তার‌ই প্রেক্ষাপটে আমাদের সকল সচেতন নাগরিকদের সকল প্রকার মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে। রুখে দাঁড়াতে হবে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে। যা আমাদের দেশ ও জাতি বিশেষ করে যুব সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • মঙ্গলবার (দুপুর ২:৪৮)
  • ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৪ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০