মো. মজিবুর রহমান রনিঃ
ডাকাতিয়া ব্রিজ রক্ষায় হাজীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাছান রাব্বির ফেজবুক স্ট্যাটাসে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
গত ১২জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রাষ্ট্রীয় সম্পদ ডাকাতিয়া ব্রিজ রক্ষায় একটি স্ট্যাটাস দেন মেহেদী হাসান রাব্বি।
এ সময় তিনি ব্রিজের পিলারের একাধিক ছবি পোস্ট করেন। কয়েকটি ছবিতে দেখা যায়, ব্রিজের একটি পিলারে পলেস্তার খসে পড়ে রড দেখা যাচ্ছে। ওই পিলারের রোডগুলো পানিতে নষ্ট হওয়ার উপক্রম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ায় চাঁদপুর-৫ হাজীগঞ্জ শাহরাস্তি আসনের সংসদ সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি ব্রিজটি রক্ষণাবেক্ষণে সড়ক ও জনপদ বিভাগকে নির্দেশ দেন। ইতো মধ্যে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া ব্রীজ রক্ষায় কার্যক্রম শুরু করেছে প্রশাসন।
১৩ জুলাই চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রতিনিধি দল এসে ব্রিজটি পরিদর্শন করে যায়।
১৪ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম ডাকাতিয়া ব্রিজ পরিদর্শন করেন । এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ব্রীজের নিচে ও নদীর দুই পাড়ের ব্রিজের পাশ ঘেঁষে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা করে ৩ বালু মহালকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট দেড় লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ওই তিন বালুমহাল সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম তানজীর।
অর্থদণ্ড দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে আকতার ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার, তাহের ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার এবং এমদাদ মজুমদার ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড জরিমানা করা হয়।
২০০১ সালে নির্মিত হাজীগঞ্জ রামগঞ্জ সড়কের হাজীগঞ্জ ডাকাতিয়া সেতুটি বালু বহনকারী ট্রলারের ধাক্কায় নদীর মাঝখানে থাকা ব্রিজের পিলারগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
পিলারের পলেস্তার খসে পড়ে যায়। পিলারের রড়গুলো বাহিরে বেরিয়ে আসে। এ রডগুলো পানিতে নষ্ট হয়ে গেলে যে কোন সময় বড় ধরণের দূর্ঘনার শিকার হতে পারে।
ডাকাতিয়া ব্রিজের দুই পাশে নদীর পাড় ঘেঁষে গড়ে ওঠা অবৈধ বালু মহালগুলোর কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে ব্রিজটি। এছাড়াও রাতের অন্ধকারে মিনি ড্রেজার দিয়ে ব্রীজের নিচ থেকে দীর্র্ঘদিন ধরে বালু উত্তোলন করে আসছে একটি প্রভাবশালী চক্র। বালুবাহী ট্রলারগুলোর নদীর নিচ দিয়ে বেপরোয়া চলাচলের কারণে পিলারের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে পিলারের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে খসে পড়ে।
রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ব্রিজ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী ব্রিজের এপ্রোজ থেকে নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে কোন ধরণের বালু মহাল এবং কোন ধরণের স্থাপনা নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ। সড়ক ও জনপদ বিভাগ এ ব্রিজ রক্ষায় কোন ধরণের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। এনিয়ে কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠে। বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যের নজরে আসলে সেতু রক্ষায় প্রশাসন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়।
ওইসময় উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয়ে উপ-পরিচালক রমিজ উদ্দিন, পৌরসভার প্যানেল মেয়র জাহেদুল আজহার আলম বেপারী, পৌর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান মুন্সী, কাউন্সিলর সাদেকুজ্জামান সাদেক’সহ বালুমহালের বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি ডাকাতিয়া ব্রীজটি ঝুঁকিপূণ দাবী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেন একাধিক ব্যাক্তি। সংসদ সদস্য মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম এমপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ব্রীজটি রক্ষায় দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ দেন।