জিনিসপত্রের দাম যেঙ্কাকরি বাড়োছে, হারা কি খাইয়া বাচঁমো ?

 

মেহেদী হাসান,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দেশের সোগ জিনিসোত আগুন নাগছে বাহে, জিনিসপত্রের দাম যেঙ্কাকরি বাড়োছে হারা কি খাইয়া বাচমো। সারাদিনের যেকনা টাকা কামাই করি, সেটা দিয়া বাজার সদাই করাই হছেনা,হারা চলমো ক্যাংকা করি ? কথাগুলো বলছিলেন ষাটউর্দ্ধ বয়সী রিক্সাচালক হোসেন আলী। রোদের উত্তাপে গরমে ঘাম ঝরছে রাস্তার পাশে রিক্সা নিয়ে দাড়ীয়ে অপেক্ষা করছে যাত্রীর আশায় এমন সময় কথাহয় রিক্সা চালক হোসেন আলী সাথে, তিনি বলেন,গত ৩০ বছর থেকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরে রিক্সা চালিয়ে জিবীকা নির্বাহ করেন, তাঁর আয় দিয়ে চলে ৫সদ্যস্যর পরিবার। কিন্তু বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায়, তার সেই আয় দিয়ে সংসারের খরচ জোগানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। রিক্সাচালক হোসেন আলী জানায়, তিনি রিক্সা চালিয়ে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করেন, এরমধ্যে মহাজনের জমা দিয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা থাকে, এই টাকায় এতোদিন তার সংসারের খরচ চললেও, এখন আর চলছেনা। এর উপর ভজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সহ বাজারে আরো একধাপ বেড়েছে নিত্য পণ্যের মূল্য এতেকরে অচল হয়ে পড়েছে তার সংসার। শুধু হোসেন আলীই নয়, একই অবস্থা অটোচালক বাবলু মিয়ার, বাবলু মিয়া বলেন, অটো চার্জার চালিয়ে একসময় তার পরিবার ভালভাবে চললেও, এখন আর চলছেনা। বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায়, সবশ্রেনীর মানুষের মাঝে অভাব দেখা দিয়েছে, এতেকরে অটোতে আয়ও কমে গেছে, এখন তার সংসার চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। একই কথা বলেন, রিক্সা চালক মমিনুল ইসলাম, রমজান আলীসহ অনেকে। শ্রমজিবীদের মধ্যে দিন মজুরদের অবস্থা আরো শোচনীয়,তাদের একদিন মজুরী হলে আরএকদিন বসে থাকতে হচ্ছে, ফলে অচল হয়ে পড়েছে সংসার। এদিকে শ্রমজিবীদের সাথে সাথে বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে তাদের দোকানের বেচা-কেনা কমে গেছে। এতেকরে একদিকে তাদের আয় কমেছে, অন্যদিকে সংসারের খরছ বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে তাদের পুঁজি হারিয়ে যেতে বসেছে। পান দোকানদার শহীদুল ইসলাম জানায়, তিনি এনজিওর কাছ থেকে ঋন নিয়ে পান দোকান করেছেন, এই দোকানের আয় দিয়ে তার সংসার খরচের পাশাপাশি এনজিওর কিস্তি পরিশোধ করেন, এখন দোকানের আয় কমেছে, অপরদিকে সংসারের খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে, ফলে তাকে মুলধন ভেঙ্গে খরচ করতে হচ্ছে। বুধবার ফুলবাড়ী পৌর বাজার ঘুরে দেখাগেছে, খোলা বাজারে এখন মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে, একই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্যের দামও, দ্রব্য মূল্যের এই উর্দ্ধগতিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের সাথে বিপাকে পড়েছে নিম্ন মধ্যবৃত্ত পরিবার গুলো। তারা বলছেন এই অবস্থা চলতে থাকলে তাদের জিবন-জিবীকা একবারে অচল হয়ে পড়বে। রিক্সা-ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফকির আলী জানান, মানুষ কর্মহারা হয়ে এখন শহরে রিক্সা চালাচ্ছে, এতেকরে শহরে এখন দিন দিন রিক্সা চালকের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু হারিয়ে যাচ্ছে রিক্সার যাত্রী, ফলে রিক্সা চালকেরা আয় কমে যাচ্ছে, নিত্যপণ্যের এই উর্দ্ধগতির কারনে, সারা দিনের আয় দিয়ে সংসারের খরচ যোগাড় করতে পারছেনা রিক্সা চালকেরা। ফলে মানবেতর জিবন-যাপন করছেন রিক্সা চালকসহ শ্রমজিবী মানুষেরা। এজন্য তিনি শ্রমজিবী মানুষের জন্য রেশন চালু করার দাবী জানান।

মেহেদী হাসান
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শনিবার (রাত ৩:২৪)
  • ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০