পুলিশ দুলাভাইয়ের বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, ৫দিনেও মামলা নেয়নি থানা

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত,
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় এক পুলিশ কনস্টবলের বিরুদ্ধে শ্যালিকা স্কুল ছাত্রীকে(১৬) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের ৫দিনেও মামলা নেয়নি থানা পুলিশ।
শুক্রবার(১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হাসপাতালের বেডে শুইয়ে ধর্ষণের লোমহর্ষক বর্ণনা দেন নির্যাতিত স্কুলছাত্রী।
এর আগে রোববার(১১ সেপ্টেম্বর) অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর বাবা।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায়(৩০) কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার কাঠালবাড়ি ইউনিয়নের বৈদ্যের বাজার মীরের বাড়ি এলাকার মৃত মনরঞ্জন রায় খোকার ছেলে এবং লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম দৈলজোড় পাঁচপাড়া গ্রামের মৃত গ্রীন চন্দ্রের জামাতা। তিনি পুলিশ কনস্টবল পদে গাইবান্ধা জেলায় কর্মরত রয়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায় সদ্য প্রসব করা দ্বিতীয় সন্তান ও স্ত্রীর দেখা করতে ছুটি নিয়ে গত শনিবার(১০ সেপ্টেম্বর) শ্বশুর বাড়ি আদিতমারী উপজেলার পশ্চিম দৈলজোড় পাঁচপাড়া গ্রামের বেড়াতে আসেন। শ্বশুর বাড়ির পাশে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলায় পাড়ার অনেকেই সেখানে ব্যস্থ ছিলেন। তার গোত্রীয় কাকা শ্বশুরের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী(১৬) বাড়ির  নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিল। ওই দিন রাত ১১টার দিকে স্কুলছাত্রীর ঘরের দরজা কৌশলে খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায়। এরপর ওড়না দিয়ে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে জোরপুর্বক ধর্ষণ করে পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্র রায়।
এক পর্যয়ে ওড়না পেচানো মুখ খুলে গেলে নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রীর আত্নচিৎকারের স্থানীয়রা ছুটে এসে লম্পট দুলাভাই পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্রকে আটক করে।
বিপুলের শ্বশুর বাড়ির লোকজন বিষয়টি জানতে পেয়ে তাদের উপর হামলা চালিয়ে আটক বিপুল চন্দ্রকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে দেয়। পরে স্কুলছাত্রীকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে তার পরিবার।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বিপুল চন্দ্রকে প্রধান করে তার শ্যালক ও শ্যালকের বউয়ের বিরুদ্ধে পরদিন রোববার(১১ সেপ্টেম্বর) আদিতমারী থানা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। পুলিশের বিরুদ্ধে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ দাখিলের ৫ দিন অতিবাহিত হলেও থানা পুলিশ কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বলে বাদির অভিযোগ।
নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর মা বলেন, বিপুলের শ্বশুররা প্রভাবশালী। বিপুল নিজে পুলিশে চাকুরী করে। পুলিশের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছি জন্য কোন প্রতিকার পাইনি। আসামী গ্রেফতার তো দুরের কথা  ৫দিন হলেও কেউ তদন্তে আসেনি থানা পুলিশ। পুলিশ জন্য কি তার অপরাধের বিচার হবে না?
হাসপাতালের বেডে নির্যাতিত স্কুলছাত্রী বলেন, দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে মুখ চেপে ধরে জোরপুর্বক ধর্ষণ করেছে পুলিশ নামের লম্পট ওই বিপুল। ধর্ষক পুলিশ সদস্য বিপুলের ফাঁসি চাই।আমার সতিত্বের বিচার না পেলে আত্নহত্যা করব।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, একটু আগে অভিযোগটি তদন্তের জন্য অফিসার পাঠানো হয়েছে। স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের মত একটি ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। আজকে জেনেছি। তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • রবিবার (সকাল ৬:০৪)
  • ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১০ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১