তানোর প্রতিনিধি: যশোর নোয়াপাড়া থেকে চোরায় ভাবে একট্রাক ডিএপি সার এনেছেন রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ের বালাইনাশক ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন। তিনি গত রোববারে এক ট্রাক এজাতীয় ডিএপি সার আনেন। অবশ্য এই একট্রাক সার নিয়ে আসার অপরাধে জসিমের ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হলেও সার নিয়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য উঠে এসেছে। এদিকে নওয়াপাড়া থেকে ১২০ মেক্ট্রিক টন ডিএপি সার চুরি হয়। এরমধ্যে ৭৯ মেক্ট্রিক টন সার উদ্ধার ও জড়িত নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।
গত রোববার বিকেলে, নওয়াপাড়া থেকে কিভাবে সার আনা হল জানতে চাওয়া হয় জসিমের কাছে তিনি জানান, নওয়াপাড়া মোল্লা ট্রেডার্স থেকে দালাল মারফতে কিনা হয়েছে। ট্রাক ডাইভার থাকলেও তিনি তেমন কিছু না বলেন জানান আমি ভাড়ায় এসেছি, কার মারফত কিভাবে জানতে চাওয়া হলে কোন উত্তর দেন নি। এতে করে জনমনে এই এক ট্রাক সার নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। ফলে সার নিয়ে প্রশাসনের ইদূর বিড়াল খেলায় চরম হতাশ।
, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের ভর্তুকি দেওয়া ডিএপি সার আমদানির দরপত্র পায় যশোরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আফিল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। প্রতিষ্ঠানটি চীন থেকে ১ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করে। জাহাজে করে মোংলা বন্দরে সার আনার পর ওই সার দুটি ছোট জাহাজে (লাইটার) করে যশোরের নওয়াপাড়া নৌবন্দরে আনা হয়। ১০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে বন্দরে নোঙর করার আগে দুই জায়গায় জাহাজের কর্মীদের সহায়তায় অজ্ঞাত চোরেরা ১২০ মেট্রিক টন সার চুরি করে নিয়ে যায়।
যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রূপন কুমার সরকার জানান, এ ঘটনায় ১৪ সেপ্টেম্বর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভয়নগর থানায় একটি মামলা করা হয়। এরপর সার উদ্ধার ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযানে নামে পুলিশ। গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর সোমবার এবং মঙ্গলবারে যশোর, বাগেরহাট, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জ, ঝিনাইদহে অভিযান চালিয়ে নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।রূপন কুমার সরকার বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, চুরি হওয়া ১২০ মেট্রিক টন সারের মধ্যে ৭৯ মেট্রিক টন (১ হাজার ৬৬৬ বস্তা) সার উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলের দিকে একট্রাক ডিএপি সার নওয়াপাড়া থেকে আনেন তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ের বালাইনাশক ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন। এমন খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্যতা মিলে এবং জসিম জানান নওয়াপাড়া মোল্লা ট্রেডার্স থেকে আনা হয়েছে। সার নীতি মালা অমান্য করায় ভ্রাম্যমান আদলত ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সার জসিম দোকান থেকে পাচার করেন। কিভাবে এলো, কার মাধ্যমে, নাকি চুরি হওয়া ডিএপি এসেছে জসিমের দোকানে এমন নানা প্রশ্ন সর্বমহলে।
সন্দেহির তীর, গত সোমবার সকাল থেকেই জসিম সার বিভিন্ন ভাবে পাচার করছেন। শুধু তাই না কৃষি অফিসারের সামনে পাচার করা হচ্ছিল। শুধু মাত্র একটিই কারন পাচন্দর ইউনিয়ন ( ইউপির) বিসিআইসি ডিলার প্রনব কুমার সাহা সারগুলো এনেছেন এবং সদরের এক প্রভাব শালী ক্ষমতাসীন দলের নেতার তদবিরের জন্য ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে এই জরিমানা করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। কারন প্রনব নিজেই বলেছেন জরিমানার টাকা আমাকে দিত হল, সারগুলো আমার, পরে একথা উল্টিয়ে জানান, জসিম আমার কাছ থেকে নওয়াপাড়া এক ব্যবসায়ীর নম্বর চেয়েছিল, আমি তাকে নম্বর দিয়েছি মাত্র, এটা প্রমান হয়ে গেছে, জসিমরা অনেক আলু করেন এজন্য নওয়াপাড়া থেকে সরাসরি এনেছেন।
আবার সার নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও ডিডির পাল্টাপাল্টি বক্তব্য উঠে এসেছে।
কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ জানান, সারগুলো জসিম এনেছে আলু করার জন্য। তাহলে জরিমানা কেন হল ও সারের কি ব্যবস্থা জানতে চাইলে তিনি জানান, এভাবে আনতে পারেনা বলেই তো জরিমানা করা হয়েছে বলে এড়িয়ে যান।
উপপরিচালক মোজদার হোসেন জানান, একজন বালাইনাশক ব্যবসায়ী এভাবে সার আনতে পারে না, তাকে কোন না কোন ডিলারের মাধ্যমে এসেছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর খতিয়ে দেখা হবে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার জসিমের কাছে জানতে চাওয়া হয় সার আপনার দোকানে নামলো, কিন্তু জরিমানা নাকি প্রনব দিয়েছে, তিনি জানান আমার সার সে কেন জরিমানা দিবে।
প্রনব সাহা জরিমানা ও সার নিজের প্রথমে সিকার করলেও গত শনিবারে তিনি বলেন জসিমের সার জসিম জরিমানা দিয়েছে, আপনি বললেন জরিমানা আমাকে দিত হল, তিনি অস্বিকার করেন।
সারোয়ার হোসেন