তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চুনিয়াপাড়া গ্রামের পুর্বপাড়ায় আদিবাসী সম্প্রদয়ের চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া চরম দূর্ভোগে পল্লীর জনসাধারণ শিরোনামে নতুন প্রভাত পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর অবশেষে সেই রাস্তার বেড়া অবমুক্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালের দিকে মুন্ডুমালা পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতাউর রহমান বাবলু রাস্তার বেড়া অবমুক্ত করেন। এতে করে আদিবাসি পল্লীতে স্বস্তি বিরাজ করছে। ফলে কেনই বেড়া দেওয়া হল আবার কেনই অবমুক্ত করা হল, কার নির্দেশে এমন অমানুবিক কাজ করা হয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি তুলেছেন আদিবাসি পল্লীর জনসাধারন।
জানা গেছে, চলতি বছরের গত সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলার মুন্ডুমালা পৌর এলাকার চুনিয়াপাড়া পুর্বপাড়া গ্রামে আদিবাসিদের কারাম উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে ওই অনুষ্ঠানে আসেন সংসদ ফারুক চৌধুরী। কিন্তু ওই পল্লীতে যেতে হয় পায়ে হেটে এবং মাটির রাস্তা। রাস্তার এমন বেহাল অবস্থা দেখে এমপি রাস্তাটি নির্মানের জন্য কর্তৃপক্ষ কে নির্দেশ দেন। এর ভিত্তিতে রাস্তার মাপজোক করা হয়। এরপরেই মুন্ডুমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান প্যানেল মেয়র ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবলুর একান্ত সহচর চুনিয়াপাড়া পুর্বপাড়া গ্রামের মৃত গোবরার পুত্র সাইদুর ও তার ভাই ময়েন বাহিনীরা আদিবাসি পল্লীর চলাচলের রাস্তায় বাশের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেন।
চলতি মাসের ০২ অক্টোবর রোববার সরেজমিনে গিয়ে রাস্তার বাশের বেড়া দেওয়ার অবস্থা দেখে পৌর মেয়র সাইদুর রহমানকে অবহিত করা হলে তিনি জানান বিষয়টি অজানা, রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কোন অধিকার নাই। দ্রুত অবমুক্ত করা হবে। ওই সময় আদিবাসি পল্লীর জনসাধারণরা বলেন গত বুধবারে এই রাস্তা ও জমিজমার বিষয়ে মারামারি হয় আতাউর, ময়েন উদ্দিন বাহিনী চাচাতো বড় ভাই লোকমানের সাথে। বয়োজ্যেষ্ঠ লোকমানকে বুকে এলোপাতাড়ি ভাবে মারলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার জানাযার নামাজ ও দাফন সম্পন্ন হয় বৃহস্পতিবারে। সেখানে মেয়র সাইদুর এসে সব দেখে যান। আর এখন বলছে কিছুই জানিনা।
বাশের বেড়া দেওয়ার ঘটনাটি নতুন প্রভাত পত্রিকার খবরটি ফেসবুকে ব্যপক ভাইরাল হয়। যার প্রেক্ষিতে মেয়র সাইদুর প্যানেল মেয়র বাবলুকে দিয়ে বেড়া অবমুক্ত করেন বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন।
মেয়র সাইদুর রহমান জানান, রাস্তায় বেড়া দেওয়ার কোন অধিকার নেই। আমি বৃহস্পতিবারে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু সেই ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। গতকাল মঙ্গলবার প্যানেল মেয়রকে নির্দেশ দিয়ে বেড়া তুলে ফেলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রায় ২০ দিন ধরে ঘর বন্দি হয়ে পড়েন আদিবাসি পল্লীর ৬০টি পরিবারের লোকজন। এঘটনায় বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় আদিবাসীদের রাস্তায় বাশের বেড়া দূর্ভোগে জনসাধারণ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। নজরে আসে কর্তৃপক্ষের। যার প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার সকালে বাশের বেড়া তুলে রাস্তা অবমুক্ত করা হয়।
সারোয়ার হোসেন
০৪ অক্টোবর /২০২২ইং