মধুপুরে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ হচ্ছে শিমুল আলু

 

আঃ হামিদ মধুপুর টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে শিমুল আলু। নাম কাসাভা। ইংরেজি নাম মনিহট ইসোলেন্টা (Monihot esculenta) । ইহা বহুবর্ষজীবী গুল্ম শ্রেণির গাছ। কান্ড গিট যুক্ত, আগা ছড়ানো, পাতা যৌগিক, গড়ন শিমুল পাতার মতো,করতলাকৃতি, লালচে রঙের দীর্ঘ বৃন্তের মাথায় লম্বাটে ছয় থেকে সাতটি পাতা থাকে। কাসাভা গাছের শিকড় জাত এক ধরনের আলু। জন্মে মাটির নিচে। নানা ভাবে ও পদ্ধতিতে এ আলু খাওয়া যায়। কাসাভা স্থানভেদে প্রচলিত বিভিন্ন নাম রয়েছে। তবে স্থানীয়ভারে কেউ কেউ শিমুল আলু , শিমলাই আলুও বলে থাকেন।
কাসাভার পুষ্টিগুণে বহুগুণে গুণান্বিত যা আটার পুষ্টিগুণ গমের আটার চেয়ে অনেক বেশি। এই আটা থেকে রুটি ছাড়াও অনেক প্রকার সুস্বাদু খাবার তৈরি করা যায়। কাসাভা ভিটামিনের দিক দিয়েও শীর্ষে। কাসাভার খাদ্যমানের মধ্যে প্রোটিন আছে ১০ শাতাংশেরও বেশি। আ্যমেইনো অ্যাসিড ও কার্বোহাইড্রেট আছে যথাক্রমে ১০ ও ৩০ শতাংশ। আরে আছে ফ্রকটোজ ও গ্লকোজ। খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম কাসাভা আলুতে রয়েছে ৩৭ গ্রাম শর্করা, ১.২ গ্রাম আমিষ, ০.৩ গ্রাম চর্বি, ৩৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ০.০৯ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৩৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এবং ১৪৬ ক্যালরি খাদ্য শক্তি।
টাঙ্গাইলের মধুপুরের লাল মাটিতে চাষ হচ্ছে এ কাসাভা । এ এলাকায় কাসাভার চাষ যুগ যুগ ধরে। স্থানীয় ভাবে এই কাসাভা শিমুল, শিমলাই আলু নামে সমাধিক পরিচিত। এক সময় গ্রামের মানুষেরা ক্ষুধা নিবারণের জন্য এ আলু প্রচুর খেত।
সুস্বাদু থাকায় পেট ভরে খেত স্থানীয়রা। জমির আইল, বাড়ির আশ পাশের পতিত জমিতে , আনারস বাগানের আইলে, বাড়ির আশে পাশে প্রায় বাড়িতে সেকালে মধুপুর উপজেলার বৃহত্তর অরণখোলা, আউশনারা ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হতো। ধীরে ধীরে বানিজ্যিক ভাবে আনারস, কলাসহ অন্যান্য ফসল চাষের ফলে শিমুল আলুর চাষ অনেকটা ভাটা পড়েছে। এখন বিদেশে এ আলুর বেশ চাহিদা হওয়ায় কৃষকরা শিমুল আলু বা কাসভা চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
অনাবাদি পতিত অনুর্বর জমিগুলো সাধারনত এ আলু চাষের জন্য নির্বাচন করা হয়। অথচ এ আলু চাষে মাটির উর্বরতা কমেনা। আমাদের দেশে কাসাভা গাছের গিটযুক্ত কান্ড গুলো ছয় থেকে আট ইঞ্চি করে টুকরা টুকরা করে সারিবদ্ধভাবে জমিতে ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে রোপণ করা হয়। আলু তোলা হয় অক্টোবর হতে নভেম্বর মাসের মধ্যে।
গাছ লাগানোর সাত মাস পর আলু খাওয়ার উপযোগী হয়। এ আলু উৎপাদনে কোন খরচ নেই বললেই চলে। সার কীটনাশক লাগেনা। গাছ ছোট অবস্থায় দু”এক বার নিরানি দিলেই চলে। এ আলুর পাতা বিষাক্ত বলে কোন প্রাণি এ গাছের পাতা খায়না।
সম্প্রতি মধুপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আবার কাসাভা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষন ও বীজ দিয়ে উৎসাহিত করছেন বলে জানান মধুপুরের কৃ্ষিকর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন রাসেল। তিনি আরও জানান এ বছর মধুপুরে ৪০ হেক্টর জমিতে কাসাভার চাষ হয়েছে।,চলতি বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কাসাভা বা শিমুল , আলুর ভালো ফলন হয়েছে। বিপণন ব্যবস্থা ভালো হলে কুষকরা লাভবান হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • বুধবার (রাত ৮:১৩)
  • ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৫ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০