সারোয়ার হোসেন,তানোর: রাজশাহীর তানোরের প্রান কেন্দ্র থানা মোড়, চারদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রয়েছে কোচিং সেন্টার প্রাইভেট হোম ও প্রতিষ্ঠান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিক্ষার্থী শিক্ষক ও নানা শ্রেণী পেশার মানুষের চলাচল। রাস্তার দুধারে রাখা হয় অটোরিক্সা, সিএনজি ও অটোভ্যান। একদিক থেকে বাস ট্রাক যাওয়া ছাড়া উপায় নেই, বিপরীত দিক থেকে এলেই বাধে যানজট। নাকাল হতে হয় শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে পথচারীদের। আবার মড়ার উপর খাড়ার ঘা বাস স্ট্যান্ড। যতক্ষণ বাস স্ট্যান্ডে থাকবে ততক্ষণ প্রচুর জট। ইতিপূর্বেই দখল হয়ে পড়েছে রাস্তার সরকারী নয়নজলি। অটোরিক্সা, সিএনজি সিরিয়ালের নামে চলে বেপরোয়া চাঁদাবাজি। চালকদের মাঝে প্রতিনিয়তই লেগেই থাকে হট্রগোল। তাদের ইভটিজিংয়ের স্বীকার হতে হয় শিক্ষার্থীদের। ঘটছে প্রতিনিয়তই ছোট বড় দূর্ঘটনা। আবার রয়েছে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি। ফলে থানা মোড়ে গোল চত্বর ও বাজারে স্ট্যান্ড করার দাবি তুলেছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, উপজেলার প্রান কেন্দ্র থানা মোড়। মোড় থেকে পশ্চিমে মুন্ডুমালা, মোড় থেকে উত্তরে তালন্দ হয়ে চৌবাড়িয়া, তালন্দ থেকে কলমা হয়ে বিল্লিহাট, হাতিশাইল বাঘের মোড় থেকে কামারগাঁ। মোড় থেকে দক্ষিণে কালিগঞ্জ হয়ে চান্দুড়িয়া দিয়ে জেলা শহর রাজশাহী। আমনুরা মুন্ডুমালা থেকে রাজশাহী গামী বাস এসে স্ট্যান্ড হয় থানার গেট সংলগ্ন জায়গায়, সেখান থেকে রাজশাহী। শহর থেকে ছেড়ে আসা বাস থামে মোড়ের পশ্চিমে জনতা স্টুডিওর সামনে। সেখান থেকে মুন্ডুমালা হয়ে আমনুরা। একটি করে বাস বিল্লিহাটে যায়, সেটাও থামে মোড়ের উত্তরে রেজিয়া টেলিকমের সামনে । সারাদিন যানজট মানুষ জটে নাকাল অবস্থা হয়ে পড়ে। আবার যতক্ষণ বাস থাকে ততক্ষণ আরো বেশি জটের সৃষ্টি হয়।
সচেতন মহলের দাবি, বিগত ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তানোর পৌরসভা। কিন্তু থানা মোড়ের অবস্থার পরিবর্তন ঘটেনি। অথচ মুন্ডুমালা পৌরসভা পরে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বাজারের তিন মাথায় গোল চত্বর হয়েছে। থানা মোড়ের দক্ষিণে একে সরকার সরকারী কলেজ, পশ্চিমে বালিকা বিদ্যালয়, উত্তরে মডেল পাইলট ও মডেল প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। এছাড়াও একাধিক কোচিং সেন্টার, প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে একাধিক। সারা দিন শিক্ষার্থীদের বিচরনে মুখরিত হয়ে থাকে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়তই ইভটিজিংসহ নানা ভাবে হয়রানির স্বীকার হতে হয়। মোড়ের পশ্চিমে, উত্তরে ও দক্ষিণে অটোরিক্সা স্ট্যান্ড। থানা গেট সংলগ্ন সিএনজি স্ট্যান্ড। দিনভর সিরিয়ালের জন্য গাড়ী রাখা হয়। রাস্তা দিয়ে চলাচলের কোন অবস্থা থাকে না।
বেশকিছু শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরের দিকে যদিও রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায়। কিন্তু বিকেলের দিকে দোকানের সামনে দিয়ে একেকজন করে ঠেলাঠেলির মাধ্যমে পার হতে হয়। এজন্য চরম বেগ পেতে হয়। যার কারনে হতে হয় নানা মুখি হয়রানির স্বীকার। আবার চালকরা মহিলা শিক্ষার্থীদের নানা আজেবাজে কথাবার্তা বলে থাকেন। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে রাস্তার দুপাশ থেকে গাড়ী তুলে দেওয়া উচিৎ, না হলে গোল চত্বর করে নির্বিঘ্ন চলাচলের পরিবেশ করার জন্য পৌর মেয়রের প্রতি আহবান জানান তারা।
স্থানীয়রা জানান, আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। চোট বড় যান প্রচুর চলছে। সেই সাথে বেড়েছে চাঁদাবাজি। প্রশাসনও দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। সপ্তাহে শুক্রবার ও মঙ্গলবার গোল্লাপাড়া হাটের দিন। থানা মোড় থেকে গোল্লাপাড়া সিনেমা হল পর্যন্ত রাস্তার দুপাশে থাকে অটো ভ্যান ও রিক্সা। এজন্য ঘন্টার পর ঘন্টা যান জোটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২৮ বছরেও মিলেনি থানা মোড়ের দূর্ভোগ। কবে মিলবে কেউ বলতে পারবে না। তবে মাননীয় এমপি মহোদয় সুদৃষ্টি না দিলে মোড়ের পরিবর্তন হবে না বলেও মনে করেন তারা।
পৌর মেয়র ইমরুল হক জানান, আমি মেয়র নির্বাচিত হয়ে থানা মোড়ে কিভাবে গোল চত্বর করা যায় সে বিষয়ে অনেকের সাথে কথা হয়েছে। অনেকের ব্যক্তি মালিকানা জমি রয়েছে, সে সব একোয়ার করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। তবে আমার মেয়াদে গোল চত্বর করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে।
সারোয়ার হোসেন
০৫মার্চ/২০২৩ইং
০১৭৬০-৮৫৭৯৮৮