মোহাম্মদ নুরুন্নবী পাবনা সংবাদদাতা:
পাবনার বহু গুণে গুণান্বিত এই মহাপূরুষের জন্ম পাবনা সদর উপজেলার অন্তর্গত আতাইকুলা ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামে। জাতির মহান এই শিক্ষক ১৯২৮ সালে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম রোস্তম আলী পন্ডিত।
মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বাংলাদেশের একজন পরিচিত ব্যাক্তিত্ব। তিনি শুধু একজন শিক্ষকই নন, বরং একজন ইসলামিক পণ্ডিত ও সফল রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বও বটে।
মহান এই শিক্ষাগুরুর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় একদন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর পুষ্পপাড়া আলিয়া মাদ্রাসায় (বর্তমানে পুষ্পপাড়া কামিল মাদ্রাসা) অধ্যায়ন করেন। তিনি সিরাজগঞ্জ হাজী আহমদ আলী আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম, ফাজিল ও কামিল সবগুলোতেই মেধা তালিকায় পাশ করেন। মাদ্রাসা শিক্ষার পাশাপাশি সরকারি এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি এবং বিএ পাশ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
এরপর তিনি কৃষি ও নাগরিক প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করেন এবং পাবনা কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হন। এছাড়াও তিনি পাবনা ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য তিনি এখন পর্যন্ত কাজ করে চলেছেন। ঢাকা জামেয়া মুহাম্মদিয়ার সভাপতি, জামেয়া আশরাফিয়া পাবনার সভাপতি, মধুপুর মহিলা আলিম মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, মধুপুর-মাদারগাছি আলহেরা কমপ্লেক্সের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কার্যক্রমের সাথে তাঁর সম্পৃক্ততা আছে।
টেকসই উন্নয়নে সামাজিক কর্মসূচীতেও তিনি এখন পর্যন্ত অবদান রেখে চলেছেন।
এর মধ্যে মধুপুর ঈদগাহ মাঠ, মধুপুর জনকল্যাণ ক্লাবসহ বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন।
পূর্ব বাংলার শেষ গভর্নর মোনেম খানের মন্ত্রিসভার সাবেক সফল “মৌলিক গণতান্ত্রিক স্থানীয় সরকার উন্নয়ন (এলজিআরডি)” এই মন্ত্রীর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও ছিলো উজ্জ্বল।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। ছাত্রাবস্থায় তিনি বৃহত্তর পাবনা জেলার নিজামে ইসলাম পার্টির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি স্বাধীনতার পর মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি, হাফেজী হুজুরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং আজিজুল হক খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ও নায়েবে আমীর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিশ্বখ্যাত এ মহান রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি এত্তেহাদুল উম্মা, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ইসলামী ঐক্য জোট এবং চার দলীয় জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। মূলত এগুলো ছিল ঐক্য প্রক্রিয়া। এ ছাড়া ও তিনি হেফাজতে ইসলামের উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়াও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সহ-সভাপতি হিসেবেও দায়িত্বপালন করেন।
সর্বশেষ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমীর হিসেবে দীর্ঘ ১৮ বছর দায়িত্ব পালন শেষে স্বেচ্ছায় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সবার শ্রদ্ধাভাজন এই ওস্তাদের জীবনী থেকে অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা নিয়ে আমরা জাতির কল্যানে কাজ করলে এই জাতি সঠিক পথে পরিচালিত হবে ইনশাআল্লাহ।
জাতির মহান এই শিক্ষক পেশাগত ও রাজনৈতিক কার্যক্রম থেকে অবসর নিয়ে এখন নিজ এলাকায় অবস্থান করছেন। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে জাতির এই শিক্ষাগুরুর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।