স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন তৈরীর বিকল্প নেই- চট্টগ্রামে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে সচিব সামসুল আরেফিন

 

সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র ও প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণসহ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হলে স্মার্ট সিটিজেন তৈরীর কোন বিকল্প নেই। আজ ৮ মে সোমবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর লেডিস ক্লাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের আওতায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র, ল্যাপটপ বিতরণ ও চাকুরী মেলার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এলডিইপি লট-৯, বিটুএম টেকনোলজিস লিঃ, আইডিয়াটেক লিঃ ও রোমোটিক লিঃ-এর বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্পের অধীনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১২১ জন ফি-ল্যান্সারের মাঝে ল্যাপটপ ও সনদপত্র তুলে দেন প্রধান অতিথি। এর পর চাকুরী মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিনসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ। এ প্রকল্পের অধীনে চট্টগ্রাম জেলায় ৭০টি ব্যাচে মোট ১ হাজার ৪’শ জনের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়েছে। তন্মধ্যে সর্বোচ্চ উপার্জনকারীদের মাঝে ল্যাপটপ ও অন্যান্যদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
সচিব বলেন, আইসিটি ডিভিশনের অনেকগুলো প্রকল্পের মধ্যে লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রকল্প অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রশিক্ষণ না দিয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেকে ১৫/২০ লাখ টাকা খরচ করে কষ্ট করে বিদেশে যায়। সমুদ্র পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার সময় তাদের অনেকে নৌকা ডুবিতে মারা যায়। এভাবে বিদেশে থাকাও সম্ভব নয়। লার্নিং এন্ড আর্নিং প্রশিক্ষণ নিতে পারলে ঘরে বসে সারাবিশ্ব আপনার চাকুরীস্থল হয়ে যাবে। বিদেশে আর যেতে হবেনা। বিদেশে ব্যয়ও বেশি, ভূর্তুকি দেয়না। বাংলাদেশে সরকার বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও সারসহ অনেক খাতে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা ভূর্তুকি দেয় বলে এ দেশে খরচ অনেক কম। তাই সামান্য একটি প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে থেকে বিদেশী সমমূল্যের টাকা উপার্জন করে যদি এদেশে ব্যয় করেন তাহলে খরচ অনেক কম হবে এবং দেশ উপকৃত হবে। পাশাপাশি দেশের সাথে, আত্মীয়-স্বজনের সাথে সবার সাথে থাকতে পারবেন।
মোঃ সামসুল আরেফিন আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ রয়েছে। এগুলো হচ্ছে-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গর্ভমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি। এগুলো বাস্তবায়ন হলে ক্যাশ ব্যবহার ও দূর্নীতি হবেনা। প্রযুক্তিকে কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পাবেনা। লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রশিক্ষণের আওতায় সারা দেশে ৬৪টি জেলা ও ৪৯২টি উপজেলায় ৪০ হাজার তরুণ-তরুণীকে এ প্রকল্পের আওতায় দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে নতুন প্রকল্প আমরা দেব।
তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি তরুণদের নানা উদ্যোগ আর প্রচেষ্টায় তথ্যপ্রযুক্তিতে পরিবর্তন আসছে। তাঁদের হাত ধরেই দেশে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। এতে দ্রæত বদলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন খাত। তরুণ সমাজ তথ্যপ্রযুক্তির প্রশিক্ষণ হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের মতো নানা কাজ শেখানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন। তারা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। তরুণ উদ্যোক্তাদের সাজেশন নতুন প্রকল্পে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে সনদপত্র, ল্যাপটপ বিতরণ ও চাকুরী মেলার অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের লার্নিং এন্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক (উপসচিব) মোঃ হুমায়ুন কবির ও রোমোটিক লিমিটেডের পরিচালক হেলাল আহমেদ রুহেল। বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ আবদুল মালেক। অনুভূতি ব্যক্ত করেন ফি-ল্যান্সার সাবরিনা ইসলাম রাহা ও সুমন কান্তি দাশসহ আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশ প্রযুক্তি বিশ্বে অর্জন করে নিয়েছে নিজেদের একটি সম্মানজনক স্থান। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মোকাবিলায় বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের উন্নতির প্রশংসা ইতিমধ্যে সারা বিশ্ব থেকেই আসছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ ভালো করছে এবং যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। বাংলাদেশ আইসিটিতে এগিয়ে চলেছে। যেকোনো দেশের সফলতার মূল বিষয় হলো নেতৃত্ব। বাংলাদেশের তা আছে।
তিনি বলেন, অনলাইন বাণিজ্যের প্রসার ঘটার সাথে সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন এন্ড ডেভেলপমেন্ট ও গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। বর্তমানে এই তিনটি পেশা মুখোমুখি অবস্থানেই খ্যাতি ছড়াচ্ছে। এজন্য নতুনদের মাঝে কৌতুহলও বেড়েছে। এদিকে দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত ‘স্মার্ট লাইসেন্সিং অ্যাপস উদ্বোধন ও স্মাট চট্টগ্রাম বিনির্মাণের অগ্রগতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মোঃ সামসুল আরেফিন। ###

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (রাত ৪:৫৮)
  • ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০