তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপরে

শাহিনুর ইসলাম প্রান্ত,
লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত থেকে তিস্তার পানি মারাত্বকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে শুক্রবার ও শনিবার বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা, ধরলা, বুড়ি তিস্তা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলাসহ জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোতে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) ভোর থেকে নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করে। হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে বিকেলে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে।
পাউবো সূত্র জানায়, তিস্তাপাড়ের লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কী পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না। পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে তিস্তার পানিতে পাটগ্রামে অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গরপোতা ও দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চর এলাকার ১০ গ্রামের ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর আমন ধানের বীজতলাসহ অনেক ফসলি জমি তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে। ইতোমধ্যে চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে।
চর এলাকার মানুষ ও অনেক পানিবন্দী পরিবার অভিযোগ করেন, তারা দুই দিন ধরে পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। এখন পর্যন্ত তাদের মাঝে কোনো ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। কেউ তাদের খোঁজ পর্যন্ত করেনি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তাই দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। দুই দিন তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • রবিবার (সকাল ৬:০৭)
  • ১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১০ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
  • ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (শরৎকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১