রাউজান প্রতিনিধি।।
চট্টগ্রামের রাউজানের মেধাবী কলেজছাত্র শিবলী সাদিক হৃদয় হত্যার প্রধান আসামী উমংচিং মারমাকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করেন উত্তেজিত জনতা। পুলিশের গাড়ি ভাংচুর, আসামি ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা ও হামলার অভিযোগ এনে রাউজান থানার উপপরিদর্শক এসআই আজিজুল হাকিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রেপ্তার এড়াতে উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামে এখন পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। অনেকের বাড়িঘরে ঝুলছে তালা। বুধবার বিকালে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,পঞ্চপাড়া গ্রামজুড়ে বিরাজ করছে সুনসান-নীরবতা। ঘটনার পর থেকে গ্রামের বাসিন্দারা প্রেপ্তার ভয়ে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বন্ধ রয়েছে আশরাফ শাহ মাজার গেটের পাশে দোকানপাট। আড্ডায় নেই পাশের বড় বাজার ঈসানভট্টের হাটেও সেখানে কিছু দোকান খোলা হলেও নেই আগের মতো লোকজন। এলাকায় গিয়ে অনেক খোঁজাখঁজি পর কিছু নারী ও শিশুর দেখা গেলও। তাদের সবার মনে বিরাজ করছে আতঙ্কের ছাপ। তারা বলছেন পুলিশ নাকি ধরে ধরে মানুষ নিয়ে যাচ্ছে। আমরা সবাই অনেক ভয়ের মধ্যে আছি। দুশ্চিন্তায় তাদের চোখে ঘুম হারাম হয়ে গেছে । এলাকাজুড়ে এখনো থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেক মহিলাও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। হযরত আশরাফ শাহ মাজারে বিভিন্ন জায়গায় থেকে প্রতিদিন আসতো শতশত ভক্ত। বর্তমানে মাজার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি হতে জানা গেছে, হৃদয়কে সেইদিন রাতে তারা অপহরণ করেন। নিয়ে যাওয়া হয় কদলপুর এলাকার পূর্ব পাশে রাঙামাটি কাউখালি ও রাঙ্গুনিয়া সীমান্ত এলাকায় ভয়ংকর এক পাহাড়ে। এই পাহাড়ের নাম রঙ্গিনছড়া। সেখান থেকে হৃদয়কে দিয়ে ফোন করায় অপহরণকারী, বলা হয় তাকে উপজেলার পাহাড়তলী থেকে প্রায় ১০-১২ ঘন্টা গাড়িতে ছড়িয়ে কোথায় যেন নেওয়া হয়। গাড়িতে নয় কৌশল অবলম্বন করেন অপহরণকারী, নিয়ে যান সেই পাহাড়ে। দাবি করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ। কোনরকম বুঝিয়ে তাদের দেওয়া হয় ২ লাখ টাকা। তাদের দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী গত ২ সেপ্টেম্বর বান্দরবান সদরে গিয়ে ডুলাপাড়া নামক স্থানে ২ লাখ টাকা তার বাবা বুঝিয়ে দেন। এরপর সন্তানকে তারা দেয়নি। অপহরণকারী আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানা যায় তারা ২৯ আগস্ট হৃদয়কে সেই ভয়ংকর পাহাড়ে গলা কেটে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা। রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, পুলিশের গাড়িতে হামলা, পুলিশের উপর হামলা ও আসামি ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা মামলার সংখ্যা বা কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। আমরা ভিডিও ফুটেজ দেখে শনাক্ত করার পর অভিযান পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছি।