হাবিবুর রহমান, চিলমারী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অষ্টমির চর ইউনিয়নে ২৫ বছর বয়সি শহর আলী নামে এক যুবক। যে বয়সে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলার কথা। ঠিক সেই বয়সে শহর আলী পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে দাড়িয়েছেন। এখন চলাচলের একমাত্র ভরসা হয়ে দাড়িয়েছেন তার বাবা-মা। আজ থেকে প্রায় ১২-১৩ বছর আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শহর আলী। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে চলাফেরা করতে পারেনি। হাত পা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। যখন চিকিৎসা নেয় তখন একটু সুস্থ থাকে, চিকিৎসা বাদ দিলে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। টাকার অভাবে আবারো বন্ধ হয়ে যায় শহর আলীর চিকিৎসা। এ দিকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন শহর আলীর পরিবার। শহর আলীর শহর জুড়েই যেন অন্ধকার। এই অন্ধকার কেটে আলোর
পথে হাটতে পারবে কি? কৃষক পরিবারে জন্ম নেয়া সেই শহর আলী চায় একটু আর্থিক সহযোগীতা। সে চলতে চায়, দুরন্ত গতিতে। তার পাশে চায় বিত্তবানদের একটু ভালবাসা ও আর্থিক সহায়তা। কুড়িগ্রামের চিলমারীর দূর্গম চরাঞ্চলের অষ্টমীরচর ইউনিয়নের মুদাফত
কালীকাপুর এলাকার কৃষক দম্পতি হাসেন আলীর ছেলে শহর আলী। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে শহর আলী ২য় সন্তান। বড় ভাই বিয়ে করার পর আলাদা হয়েছেন। ছোট মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। বাকী এক ভাই ও ছোট
বোনকে নিয়ে শহর আলীর চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিমে আছেন শহর আলীর পিতামাতা।
পরিবার সুত্রে জানা গেছে, ১২ বছর বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হয় শহর আলী। সেই থেকে প্রায় ১৩ বছর ধরে বিছানায় শুয়ে কাতরাছেন এই শহর আলী। এর মধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পিজি হাসপাতালে নিয়ে ছিলেন, কিন্তু টাকার অভাবে সেখানে বেশি দিন চিকিৎসা করাতে পারেনি। শহর আলীর বাবা হাসেন আলী বলেন, ছোট বেলায় হঠাৎ আমার ছেলের পুরো শরীরে ব্যাথা হয়, পরে স্থানীয় ডাক্তার দেখাই তারা বলেছেন বাত জ্বর। পরে বাড়ির ২টি গরু বিক্রি করে ঢাকার হাসপাতালে নিয়ে যাই কিন্তু টাকা শেষ হলে সেখান থেকে বাড়ি ফেরত আসি। তখন থেকেই জমি-জমা বিক্রি করে ছেলের পিছনে টাকা দিচ্ছি কিন্তু আর পারছি না। এখন সংসার চালানোই বড় দায় হয়ে পড়ছেন।
মা বেগম বলেন, মা-বোনেরা টাকা দিত সেই টাকা দিয়েই চিকিৎসা করাতাম, তারা আর কত দিন টাকা দিবে তাদের ও তো পরিবার আছে। ছেলের পিছনে ১২/১৩ বছরে প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। আর পারছিনা। চেয়ারম্যান-
মেম্বাদের পিছনে ঘুরেও একটা প্রতিবন্ধী কার্ড করতে পারি নাই। পরে নদী পার হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান শওকত আলী সরকারের কাছে গেলে ছেলের জন্য একটা প্রতিবন্ধী কার্ড পাই। আপনারা এখন সাহায্য করলে ছেলেকে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারব, চিকিৎসা করালে আবার সুস্থ্য হবে। তিনি আর ও বলেন, বড় ছেলে আলাদা খায়। এখন তিন ছেলে মেয়েকে নিয়ে সংসার ঠিক মতো চলাতে পারছি না। ছেলের চিকিৎসা কিভাবে করাবো। এখন ভিটে বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই আমার। অশ্রুশিক্ত নয়নে ভার কন্ঠে শহর আলী বলেন, আমি ও সাধারণ মানুষের মতো বাঁচতে চাই, তাদের মতো করে চলতে চাই। অনেক টাকা গেছে এখন আমার বাবা মা আর পারছেন না আমার চিকিৎসা করাতে। এখন সকলের সহযোগীতা ছাড়া আমি আর ভালো হতে পারব না। শহর আলীর পাশে এখন কে দাড়াবে? কে দিবে আশার আলো? কে দিবে একটু ভালবাসা। তার শহরে এখন হতাশায় ভরপুর। অষ্টমীর চর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বলেন, শহর আলীর জন্য যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা করা দরকার আমরা চেষ্টা করব। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে খোঁজ খবর যা সহযোগিতা করা প্রয়োজন আমরা
চেষ্টা করব। কেউ আর্থিক সহযোগীতা করতে চাইলে, শহর আলীর এই বিকাশ নাম্বারে দিতে পারেন। বিকাশ–(০১৯৯০০৪৯৭০৮) পার্সনাল।
মোঃ হাবিবুর রহমান।
চিলমারী, কুড়িগ্রাম।