উপজেলা বাছাই কমিটিতে বাতিল, জামুকায় বহাল- মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষোভ

 

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ
যুদ্ধে অংশগ্রহন না করে এবং পাক-হানাদার বাহিনীকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেও বেসামরিক গেজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত হয়েছেন ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের মৃত মোনসুর আলীর ছেলে মোরশেদ আলী। এমন অভিযোগ তুলে ২০২১ সালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা।
মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে উপজেলা কমিটি মোরশেদ আলীর নাম বাতিল করলেও আপিলের ভিত্তিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) তাকে পূণরায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় বহাল করেন। বিতর্কিত ওই মুক্তিযোদ্ধা পূণরায় তালিকাভূক্ত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধারা।
ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের মৃত মোনসুর আলীর ছেলে মোরশেদ আলী মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় কর্তৃক ২০০৫ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তালিকাভূক্ত হন। সাময়িক সনদপত্র লাভ করেন ২০০৭ সালে। এ ইউনিয়নে ইপিআরসহ ভারতীয় তালিকাভূক্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৩০ জন।
২০২১ সালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কার্যক্রম শুরু হলে, ওই ইউনিয়নের এসএম জসিম উদ্দিন, মো. আব্দুল কাদের, শ্রী নিখিল চন্দ্র ভৌমিক, মো. গিয়াস উদ্দিন, মো. আবুল কাশেম, মো. সামছুল হক, মো. ইউসুফ আলী, মো. জামাল উদ্দিন আহমেদ, মো. মোখলেছুর রহমান ও ইদ্রিস আলী নামে ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) বরাবর মোরশেদ আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। তাদের অভিযোগ, যুদ্ধে অংশগ্রহন না করে এবং পাক-হানাদার বাহিনীকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেও বেসামরিক গেজেটে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভ‚ক্ত হয়েছেন মোরশেদ আলী।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির প্রতিবেদনের মন্তব্যে মোরশেদ আলী মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হননি। সেই সঙ্গে রাজাকার/৭১ ভূষিত হন। কমিটিতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনিত সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন মো. মনজুরুল ইসলাম, স্থানীয় সংসদ সদস্য কর্তৃক মনোনিত সদস্য ছিলেন একেএম ফজলুল হক আবুল, জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনিত সদস্য ছিলেন মো. কামাল পাশা ও সদস্য সচিব ছিলেন ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান। তালিকা থেকে নাম বাতিল হওয়ায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) আপিল করেন মোরশেদ আলী। জামুকা তাকে পূণরায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় বহাল করেন। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কানিহারী ইউনিয়নের অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধারা।
অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন, আবুল কাশেম ও মোখলেছুর রহমানসহ অন্যান্যরা
বলেন, একাত্তরে পাক-হানাদার বাহিনীকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছে মোরশেদ আলী। সে মুক্তিযোদ্ধা নন, সে একজন রাজাকার। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে সে মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হননি। তারপরও পূণরায় তালিকাভূক্ত হয়েছেন, পাচ্ছেন ভাতা। একজন রাজাকারের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তুলতে গিয়ে আমরা লজ্জা পাই।
এসব বিষয়ে মোরশেদ আলী জানান, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির চারজনের মধ্যে জেলা প্রশাসক মনোনিত সদস্য কামাল পাশাই ছিল প্রধান। তাকে এক লাখ টাকা দিতে পারিনি বলে, আমাকে বাদ দেয়া হয়। পরে জামুকাতে আপিল করি। আপিল বোর্ড পূণরায় আমাকে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাভূক্ত করেছে।
টাকা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য কামাল পাশা বলেন, হাউজে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে রাজাকার বলছে, তাই তার নাম বাতিল হয়।

এস.এম রুবেল আকন্দ,
ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (রাত ২:২০)
  • ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০