আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ প্রতিনিধি।।
কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)’র সদস্যরা অভিযান চালিয়ে ০২ বছরের এক অপহৃত শিশু উদ্ধার করেছে। এসময় র্যাব সদস্যরা অপহরণের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ২ জনকে আটক করেছে। শুক্রবার (১২ আগস্ট) সন্ধ্যায় কলাতলি হোটেল-মোটেল জোন এলাকার মোহাম্মদীয়া হোটেলের একটি কক্ষ থেকে অপহৃত শিশুসহ তাদের আটক করে। আটককৃতরা হলেন,কেয়া (২২), পিতা-মোঃ কেরামত আলী, মাতা-মোছাঃ রাবেয়া বেগম, সাং-বড়জাইলা, ইউপি-উসমান মঞ্জিল, থানা-হিজলা, জেলা বরিশাল (বর্তমান ঠিকানা-সাং-মৌশাইর, আলাউদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া, থানা-দক্ষিণখান, ঢাকা) ও ছুফুয়ান খান রাহাত (২৪), পিতা-মোঃ নাছির হাছান, মাতা-রাশেদা বেগম, সাং-কবুতরখোলা, পোঃ+থানা-শ্রীনগর, জেলা-মুন্সিগঞ্জ (বর্তমান ঠিকানা-সাং-মৌশাইর, আলাউদ্দিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া, থানা-দক্ষিণখান, ঢাকা)।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১২ আগস্ট) আনুমানিক ১৮.৩০ ঘটিকার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫’র একদল সদস্য
কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন কলাতলী হোটেল-মোটেল জোন এলাকার মোহাম্মদীয়া হোটেলের একটি কক্ষে অভিযান চালিয়ে ০২ বছরের এক অপহৃত শিশু উদ্ধারসহ অপহরণের সাথে জড়িত কেয়া ও ছুফুয়ান খান রাহাত নামের ২ জন অপহরণকারীকে আটক করে।
এদিকে আটককৃত অপহরণকারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম ০১ নং আসামী কেয়ার আপন মামাতো বোন। ভিকটিমের পরিবারের সাথে আসামীর পরিবারের ভালো একটা সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। গত ২০২০ সালে ০১ নং আসামী কেয়ার সাথে ০২ নং আসামী ছুফুয়ান বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের সময় ছুফুয়ান ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করতো। কিন্তু ০৮ মাস পূর্বে ০২ নং আসামীর হঠাৎ চাকুরী চলে যায় এবং সে কর্মহীন হয়ে পড়ে। এর পর থেকে আসামীরা তাদের সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ করে সংসার চালাতে থাকে। এর মধ্যে তাদের ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকার একটি ঋণ গত ১০ আগস্ট ২০২২ ইং তারিখে পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু তাদের কাছে কোন টাকা পয়সা না থাকায় তারা ঋণ পরিশোধের ভয়ে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও জিনিসপত্র বিক্রি করে ভাড়া বাড়ি থেকে পালিয়ে আত্নগোপন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরবর্তীতে আসামীগণ তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একটি অপহরণের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ০১ নং আসামী কেয়া গত ১০ আগস্ট ২০২২ ইং তারিখে তার মামার বাড়িতে বেড়াতে যায়। এরপর কৌশলে সে তার মামাতো বোনকে অপহরণ করে এবং স্বামী ছুফুয়ানের সহযোগিতায় কক্সবাজারে নিয়ে এসে একটি হোটেল ভাড়া নেয়। পরবর্তীতে ভিকটিম এর পরিবারকে ফোন করে অপহরণের বিষয়টি জানায় ও মুক্তিপণ বাবদ ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা দাবি করে এবং টাকা না দিলে ভিকটিমকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি প্রদান করে। অতঃপর ভিকটিমের পরিবার দক্ষিণখান থানায় ০২ জনকে আসামী করে ২০০০ সনের (সংশোধনী ২০০৩) এর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের পরিবার ভিকটিমসহ আসামীগণ কক্সবাজারে অবস্থান করছে জানতে পারলে র্যাব-১৫, কক্সবাজারের নিকট সহযোগিতা চায় এবং র্যাবের আভিযানিক দল কর্তৃক অপহৃত *শিশু ভিকটিমকে* উদ্ধারসহ উক্ত অপহরণের সাথে জড়িত ০২ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
এদিকে ভিকটিমকে উদ্ধারপূর্বক তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাব সূত্রে জানা যায়।।