একুশ আমার চেতনা-নজরুল বাঙালি

১৯৫২ এর একুশ আমি দেখিনি, তারও এক দশক পর আমার জন্ম তাই বলে একুশ কে জানার আগ্রহ আমার কম ছিল না বা শহীদের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদন থেকে কোন দিনও বিরত থাকিনি।প্রতিনিয়তএকুশের চেতনা কে লালন করেছি অন্তরে ।

সেই ছোট্ট থেকে মাটির শহীদ মিনার বানিয়ে কালো রং লাগিয়ে বন্ধুরা মিলে তাতে হলুদ গাদার ফুল ছিটাতাম স্কুলে একুশে ফেব্রুয়ারী দিবসটি পালন হতো শিক্ষকগণ বলতেন খালি পায়ে শহীদ মিনারে উঠে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে সম্মান জানাতে আমরা তাই করতাম।
তখনো প্রভাত ফেরী হতো সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে গান গাইতাম “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি।

তখন হয়তো বয়সের কারনে সব বিষয় না বুঝলেও এখন কিন্তু শহীদের প্রতি শ্রদ্ধাটা হৃদয়ের ভাল লাগা থেকে করি এবং করে যাবো। একুশের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে দেশী বিদেশী অনেক জ্ঞানি গুনি কবি সাহিত্যিক সাংবাদিক গল্প
কবিতা উপন্যাস লিখেছেন বা এখনো লিখছেন তার একটিও বৃথা যায়নি । তখন লিখাগুলো ভাষা আন্দোলনের সাহস যুগিয়েছে আর এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দাবী টাকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রেরনা যুগিয়েছে। একুশ সম্পর্কে অনেক লিখা আমার নজরে এসেছে তা পড়ে জেনেছিও অনেক কিছু। অমর একুশ সম্পর্কে কিছু
লিখার সেই জ্ঞান বা সেই জ্ঞানের পরিধি এখনো অর্জন করিনি বা সেই দুঃসাহস ও আমার নেই। তবে একুশ সম্পর্কে পড়ে ও জেনে যা উপলদ্ধি হয়েছে তার কিছুটা
বন্ধুদের সাথে সেয়ার করা মাত্র।

১৯৫২ এর একুশ আন্দোলনটি ছিল মূলত মাতৃভাষা
রক্ষার আন্দোলন। তৎকালিন ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরাই এর সর্বাগ্রে ছিল এবং মূলত এইটি একটি ছাত্র আন্দোলন ছিল পরবর্তীতে অবশ্য সাধারন জনতাও
এতে যোগ দিয়ে ছিল। আর তার অন্যতম স্লোগান ছিল রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই, সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু কর। অবশেষে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার এর তাজা
রক্তের বিনিময় প্রতিষ্ঠিত বাংলা ভাষা আর দরকার ছিল বাংলা ভাষা-ভাষি একটি স্বাধীন দেশ। পরিশেষে একুশের
চেতনার সাথে যুক্ত হয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ চেতনায় উনসত্তরের গনআন্দোলন ও একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে ও অগনিত মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময় এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হলো একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যূদয় ঘটলো।

আর এই জন্যই প্রিয় পাঠক বৃন্দের বলছি সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার নিঃশর্ত আত্বত্যাগ এর বিনিময় আমরা মা এর ভাষা বাংলা ভাষা পেয়েছি এবং তাকে
অন্তরে লালন করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা
হিসেবে স্বীকৃতি আদায় করেছি। আজ বিশ্বের সব কয়টি দেশে উদযাপিত হচ্ছে আমাদের অর্জিত বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষা হিসাবে। তা হলে আজ আমরা কেন ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত আর অগনিত মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময় পাওয়া বাংলাদেশটিকে লোভ লালসার উর্দ্বে থেকে বিশ্বের বুকে এই দেশ টিকে মধ্য আয়ের দেশ বা উচ্চ আয়ের দেশে পরিনত করতে পারবোনা। কেনই বা দেশ থেকে দূর্নীতি সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ নিঃমূল
করতে পারবোনা। তাই আসুন আমরা একুশের চেতনায় উদ্বূদ্ধ হয়ে আর একটি নিরস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে হিংসা বিদ্বেশ ভুলে আগামী প্রজম্মের জন্য সুন্দর এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি।যেখানে থাকবেনা দূর্নীতি সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ অস্বাভাবিক মৃত্যূ। সেখানে থাকবে অনাবিল সুখ শান্তি আর স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারেন্টি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শনিবার (সন্ধ্যা ৬:৩৬)
  • ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৫শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১