স্টাফ রির্পোটার।। চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬নং মৈশাদী ইউনিয়নে রাস্তা নির্মাণ এবং বসত বাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। একটি পরিবারের ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে বাউন্ডারী দেয়াল নির্মাণ এবং ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক রাস্তা নির্মাণ নিয়ে দুটি পক্ষই অনড় অবস্থানে রয়েছে। ফলে এ বিরোধের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভুক্তভোগী জমির মালিক মীর জুমলা খানের দাবী, মৈশাদী ইউপির চেয়ারম্যান খামখেয়ালী মতো জোরপূর্বক বসতবাড়ির বাউন্ডারি দেয়াল করতে বাঁধা প্রদান করেন। একই সাথে ১টি পরিবারকে বিশেষ সুবিধা দিতে জোরপূর্বক তার কয়কৃত জমির উপর রাস্তা নির্মাণ করছে। অপরদিকে ইউপি চেয়ারম্যানের দাবি, তিনি জনস্বার্থে এ রাস্তা নির্মাণ করছেন এবং এর জন্য নিজের জমিও দান করে দিচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মৈশদী ইউনিয়নের মৃত আলীয়ার খাঁনের পুত্র মীর জুমলা খাঁন প্রায় ১যুগ আগে বসতবাড়ি নির্মাণের জন্য মৈশাদী তালতলা বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে ২ ভাগে মোট ১১শতক জমি ক্রয় করেন। এর মধ্যে ২০০৯ সালের ২০ মে মাসে মৃত ফয়েজ উল্লাহ পাটওয়ারির পুত্র ও মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারির কাছ ৩৩৩১ নং দলিল দাগে সাড়ে ৫ শতক জমি ক্রয় করেন। এরপর ২০১১ সালের ৭ ডিসেম্বর একই জমির অপর অংশিদার রওশন আরা, ফাতেমা খাতুন জোহরা ও মোসাম্মদ রাবেয়া বেগমের কাছ থেকে
১০০০৫ নং দলিল দাগে বাকি সাড়ে ৫ শতক জমি ক্রয় করেন।
সম্প্রতি তিনি তার ওই জমির পশ্চিম পাশে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ করতে গেলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তাতে বাঁধা প্রদান করেন এবং জমির দক্ষিণ পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের জন্য বালু ফেলেন। তাৎক্ষনাত বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে অবগত করলে পরে মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে দুই পক্ষের কাজ বন্ধ রেখে উভয়পক্ষকে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার জন্য নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মীর জুমলা খাঁনের ভাই ওমর খইম খান বলেন, আমরা প্রায় ১২ বছর আগে চেয়ারম্যান এবং তাদের পরিবারের কাছ থেকে ১১শতাংশ জামি ক্রয় করেছি। কয়েকদিন আগে বাড়ির কাজ ধরবো বলে পশ্চিম পাশে বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণ শুরু করি। কিন্তু হঠাৎ করে যার কাছ থেকে জমি কিনেছি সেই চেয়ারম্যান নিজেই আমাদের বাউন্ডারি দেয়াল নির্মাণে বাধা দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, একটি পরিবারকে বিশেষ সুবিধা দিতে জোরপূর্বক আমাদের জমির উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করার জন্য রাতের আধারে বালু ফেলে রেখেছে। আমরা আমাদের জমিতে বাউন্ডারি নির্মল দেয়াল নির্মাণ করার জন্য প্রশাসনের কাছে সহযোগীতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে মৈশাদী ইনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম পাটওয়ারি বলেন, মীর জুমলা খাঁন আমার এবং আমার পরিবারের কাছ থেকে দুই ভাগে ১১ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। কিন্তু ওই অংশে আমাদের মোট জমির পরিমাণ ১৪ শতাংশ। কিছুদিন পূর্বে জমির পশ্চিম অংশের প্রায় ২৫ টি পরিবার একটি রাস্তা নির্মাণের দাবি জানিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর আবেদন করেন। রাস্তা নির্মাণের জন্য ওই পরিবারগুলো প্রায় ১০ শতাংশ জামিও ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে জনস্বার্থে আমরাও আমাদের বাকি ৩ শতাংশ জমি ছেড়ে দিয়েছি। রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হলে হঠাৎ করেই মীর জুমলা খাঁন পুরো জমির পশ্চিম অংশে বাউন্ডারি দেয়াল করার নামে রাস্তা নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
তিনি আরো বলেন, যেহেতু আমি এ ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি এবং ওই জমি আমরাই বিক্রি করেছি, তাই আমি কখনোই চাইবো না তাদের এক পয়েন্ট জমির ক্ষতি হোক। আমরা তাদের ১১ শতাংশ জমি বাদ রেখেই রাস্তা নির্মাণের কাজ করছি।