মতলবে ইজারাকৃত পুকুরের মাছ বিষ প্রয়োগে নিধন, হামলায় আহত ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চাঁদপুরের মতলব দক্ষিন উপজেলার নারায়নপুর বাড়ৈগাঁও গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ীর বাসিন্দা মো. শাহ আলমের ইজারা নেয়া পুকুরের চাষকৃত ৪ লাখ টাকা মূল্যমানের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ একই বাড়ীর লোকজন বিষ প্রয়োগ করে নিধন করেছেন। ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে আহত হয়েছেন শাহ্ আলম, তার ছেলে হাসান ও হাসানের স্ত্রী ফরিদা আক্তার। এতেই ক্ষান্ত হননি ওই সংঘবদ্ধ চক্রটি। তারা নিয়মিত মো. শাহ আলম ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। এই ঘটনায় ১২ জুন চাঁদপুরের মতলব আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন মো. শাহ আলম।

মামলায় আসামীরা হলেন-বাড়ৈগাঁও গ্রামের প্রধানিয়া বাড়ীর মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে নাছির (৩৮), মৃত আঃ আউয়ালের ছেলে রহমত উল্যাহ (৪০), মৃত আবদুল সাত্তারের ছেলে বাবুল (৪২), মৃত তফাজ্জলের ছেলে মোহান (৪৫), মৃত আঃ আউয়ালের ছেলে মো. জসিম (৪৮), মৃত মোস্তফার ছেলে অনিক (২৪), আলী আকবরের ছেলে মিজান (৪২), জসিমের ছেলে কাউছার (২৪) এবং অজ্ঞাতনামা আরো ১০-১৫জন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বাড়ীর পুকুর বিগত ১৫ বছর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন মো. শাহ আলম। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি একই বাড়ীর নাছির, রহমত উল্যাহ, বাবুল, মোহান ও মো. জসিমের কাছ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকায় ৫ বছরের জন্য পুকুর ইজারা নেন। ইজারার মেয়াদ এখনো ১ বছর বাকী। কিন্তু এরই মধ্যে পুকুর ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগসহ শাহ আলমের সাথে বিবাদ, বিষ প্রয়োগ মাছ নিধন, পাম্প মেশিনে পুকুরের পানি নিস্কাশন করে মাছ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি, একাধিকবার হামলা, ঘটনা জানতে আসা গনমাধ্যম কর্মীর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনা ঘটেছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানাগেছে, গত ৮ জুন রাতে ইজারা প্রদানকারীরা পুকুরের বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করে। পরদিন সকালে শাহ্ আলম ঘটনাটি টের পান। বিষয়টি তিনি স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের জানান। এরপর তারা আবার পানির সেচ পাম্প বসিয়ে পানি নিস্কাশন করলে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শাহ আলম। ওই সময় তারা তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এরপর ১০ জুন বিকেলে ওই পুকুরে সরেজমিন যাওয়া সাংবাদিক আব্দুল মান্নান পুকুর ইজারা বিষয়ে শাহ আলম ও তার ছেলের বক্তব্য ভিডিও ধারণ করেন। এরপর প্রতিপক্ষ লোকজন এসে ক্যামেরা নিয়ে যায় এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। একই সময় শাহ্ আলম তার ছেলে ও ছেলের অন্তস্বত্ত্বা বউকে কয়েকবার মারধর করে গুরুতর আহত করেন। মারামারির সময় তারা বহিরাগত লোকজন এনে সংঘবদ্ধ হয় এবং হামলা করে। পুরো ঘটনার সাথে এলাকার একটি সংঘবদ্ধ চক্র জড়িত।

শাহ আলম জানান, ১০ জুন সন্ধ্যা ৬টার দিকে গনমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় প্রতিপক্ষ লোকজন আমার ছেলে ও আমার উপর প্রথমে হামলা করে। গনমাধ্যম তাদের কথাও শুনবে এমন কথার পরও তারা অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। তারা আমাদেরকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি সোটা নিয়ে মারধর করে। অল্পের জন্য আমি ও আমার ছেলে প্রাণে রক্ষা পাই। পরবর্তীতে আমি চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে, আমার ছেলে ও ছেলের বউ মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে চিকিৎসা নেন। এরপর আমি ১২ জুন মতলব আমলী আদালতে ৪ লাখ টাকার মাছের ক্ষতি সাধন ও মারধরের ঘটনায় মামলা করি। আমি এই ঘটনা সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি। কারণ তারা আমাকে প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে।

এদিকে, মামলাটি আদালতে আমলে নেয়ার পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • বুধবার (সন্ধ্যা ৬:২২)
  • ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১