এস আর শাহ আলমঃ
কোথায় যেন পড়েছিলাম “দৃষ্টিভঙ্গি বদলান জীবন বদলে যাবে।” ছোট বাক্য, অথচ খুবই্ তাৎপর্যপূর্ণ। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সামাজিক বিভিন্ন পেক্ষাপটে মানুষের দৃ্ষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে থাকে। কথায় বলে, “ মানুষ তার দৃষ্টিভঙ্গি দ্বারা পরিচলিত হয়” যার দৃষ্টিভঙ্গি্ ইতিবাচক, সে যেকোন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে পারে, এটা তার বিশেষ গুণ কিন্ত যার দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক নয় বা নেতীবাচক, সে পারেনা সকলের সাথে মানিয়ে চলতে। তার জন্য অন্যদের বিভিন্ন রকম সমস্যার মুখোমুখী হতে হয়। সে শুধু ব্যস্ত থাকে নিজের ভাবসাব বজায় রাখা নিয়ে, এটা আমার কাজ নয়, ওটা তার কাজ, প্রত্যেক ক্ষেত্রেই খুটিনাটি দোষত্রুটি বের করা তার চরিত্রের অন্যতম উপাদান।
১. দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হোনঃ
আপনার মনোভাব উন্নত করার পেছনে কোন জিনিসটি কারণ হিসেবে কাজ করছে সেটা সর্বপ্রথম খুঁজে বের করুন। আপনি কেন আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে চাইছেন? দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার মাধ্যমে আপনি কি সুখী জীবন চান নাকি সামাজিক জীবন চান? সেটা কি আপনি আপনার জীবিকা নির্বাহের তাগিদে ব্যবহার করতে চান নাকি চাইছেন আপনার ব্যবসায় সফল হতে? সর্বপ্রথম আপনাকে এই সকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হবে। তবেই আপনি আপনার লক্ষ্যকে সামনে রেখে খুব সহজেই দৃষ্টিভঙ্গিকে বর্তমানের তুলনায় উন্নত করে গড়ে তুলতে পারবেন।
২. উদ্দেশ্যের বাহিরে যাবেন নাঃ
আপনার লক্ষ্য ঠিক করার পর সেই অনুযায়ী নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করুন। উদ্দেশ্যের সাথে যায় না এমন কোনো ধরনের পরিবর্তন আপনার ভেতরে আনার চেষ্টা করবেন না। কারণ যখন আপনি আপনার উদ্দেশ্যের বাহিরে চলে যাবেন তখন আপনার ভেতরে গঠনগত কোন উন্নয়ন থাকবে না। আর গঠনগত উন্নয়ন ছাড়া যেকোনো লক্ষ্যে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। তাই সবসময় আপনার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যান।
৩. উৎসাহিত হতে অন্যকে অনুসরণ করুনঃ
আপনার এগিয়ে যাওয়ার পথে হতাশা বা অনিশ্চিয়তা যেকোনো সময় আপনাকে ঘিরে ধরতে পারে। আপনি যা করছেন সেখানে আপনি কতটা সফল হবেন অথবা আদৌ সফলতা অর্জন করতে পারবেন কিনা সেই বিষয়গুলি আপনাকে কর্মবিমুখ করে তুলবে। আর তাই এগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে আপনি এমন কোনো মানুষকে অনুসরণ করুন যিনি ঠিক সেই ধরনের মনোভাবের অধিকারী যা আপনি অর্জন করতে চাইছেন। এ ধরনের মানুষকে অনুসরণ করার ফলে আপনার ভেতরে এক ধরনের সাহস কাজ করবে যা আপনাকে এগিয়ে চলার পথে উৎসাহিত করবে।
৪. প্রতিদিন একটু বেশি এগিয়ে যানঃ
মনে করুন আপনি খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আপনি যদি প্রতিদিন একমুঠো ভাত বেশি খাওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে দেখবেন একটা সময়ে গিয়ে আপনি অনেক খাবার খেতে পারছেন। ঠিক একইভাবে দৃষ্টিভঙ্গি উন্নত করতে হলে আপনাকে প্রতিদিনের রেকর্ড ভাঙতে হবে। প্রতিদিনই ঠিক আগের দিনের চেয়ে একটু বেশি কাজ করতে হবে যা আপনাকে একটা সময়ে গিয়ে অনেক উপরে পৌঁছে দিবে। সেটা হয়তো আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। ভালো দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির জন্য অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার করুন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন
৫. সবসময় ফলাফলের আশা করবেন নাঃ
মানুষ প্রতিদিন অনেক ধরনের কাজ করে থাকে। কিন্তু তারা কি প্রত্যেকটি কাজেই সফলতা অর্জন করতে পারে? কখনো পারে না। তাই সবসময় ফলাফলের আশা করে কাজ করবেন না। হয়তো কোনো কাজ পাঁচবার করলে দুইবার ব্যর্থ হতে পারেন। যখন খুব বেশি ফলাফলের আশা না করেই দুইবার কাজে ব্যর্থ হবেন তখন ব্যর্থতার প্রভাব আপনার ওপর কখনো পড়বে না। আর অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে যে, কাজ করে আপনি হয়তো ব্যর্থ হয়েছেন কিন্তু অভিজ্ঞতা অর্জনে ঠিকই সফল হয়েছেন।
৬. দক্ষতা অর্জন করুনঃ
যদি কখনো আপনি আপনার কাজে ব্যর্থ হন, তাহলে ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে জীবনটাকে ব্যথিত করা বাদ রেখে আপনার উচিত হবে সেই কাজে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো। আপনার অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে খুঁজে বের করতে হবে যে কাজটি কীভাবে বা কোন পদ্ধতিতে অথবা কোন সময় করলে আপনার সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকত? এভাবে ব্যর্থতা গুলোকে একসাথে কাজে লাগিয়ে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করুন।
৭. সকল বিষয়ে অতি গুরুত্ব দেবেন নাঃ
আপনি যদি জীবনে সুখী থাকতে চান তাহলে ছোটখাট বিষয় নিয়ে হুট করে রেগে যাওয়া পরিহার করতে হবে। সব সময় যেকোনো কিছু হাস্যজ্জল ভাবে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। যদি যেকোনো বিষয়ে খুব দ্রুত রেগে যান বা খুব সাধারন কোনো বিষয় অত্যধিক গুরুত্বের সাথে নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার আশেপাশের মানুষজন আপনাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে। তাই সহজে রেগে যাওয়া থেকে নিজেকে বের করে এনে হাসিমুখে থাকার চেষ্টা করুন।
৮. অন্যদের স্বাভাবিক ভাবে নিনঃ
অনেক বড় মাপের কোনো ব্যক্তি অবশ্যই মানুষের কাছে প্রশংসার যোগ্য। অথবা অনেক বেশি কাজ করতে পারা ব্যক্তিও যেকোনো মানুষের কাছে একটু বেশি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু মানুষ আপনার কথা শুনছে না বা আপনার মন মতো কাজ করতে পারছে না অথবা আপনি যা অনুভব করছেন তারা সেটা অনুভব করতে পারছে না; এগুলো ভেবে নিজের মনকে অতিষ্ঠ করবেন না। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষের আচার-আচরণ চিন্তাভাবনা সবকিছুই আলাদা। তাই অন্যদের খুব সহজেই মেনে নিতে শিখুন।
৯. ভালো মানুষদের সাথে চলাফেরা করুনঃ
কথায় আছে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। একজন ভালো মানুষ হয়েও যদি খারাপ সঙ্গীদের সাথে চলাফেরা করে তাহলে খুব সহজে সেও খারাপ হয়ে যাবে। তাই, যারা নেতিবাচক মনোভাবের অধিকারী অথবা আপনাকে সবসময় হতাশার কথা শোনায় তাদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন। বন্ধুদের উৎসাহ অথবা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আপনার জীবনে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে আপনাকে পরিবর্তন করতে।
১০. ধন্যবাদ দিনঃ
কোনো মানুষের সাথে যেকোনো কাজ সম্পন্ন করার পর তাদেরকে ধন্যবাদ জানানোর অভ্যাস করুন। কেউ যদি আপনাকে এক কাপ চা এনে খাওয়ায় অথবা কখনো কোনো দোকানদারের কাছ থেকে কোনো জিনিস নিয়ে থাকেন, তাহলে তাদেরকে ধন্যবাদ দিন। আপনার এই ছোট একটি অভ্যাস মনকে প্রফুল্ল রাখবে এবং ন