শাহাদাত হোসেন, রাউজান ( চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
নেই বৃষ্টিপাত, অন্য দিকে তীব্র তাপদাহে সাগরের নোনাপানি টুকে পড়েছে হালদা নদীতে। ফলে হালদায় মা মাছের ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ নেই। এই নদীতে প্রতিবছর প্রজনন মৌসুমে (এপ্রিল থেকে জুন) ডিম ছাড়ে কার্পজাতীয় মা মাছ। পরিবেশ অনুকুলে না থাকায় এপ্রিল মাসের দুটি জো এবং মে মাসের পূর্ণিমার জো অর্থাৎ তৃতীয় জো (২ থেকে ৭ মে) অতিক্রম হলেও এখনো দেখা মিলেনি মাছের কাঙ্ক্ষিত ডিম।হালদা গবেষকরা বলছেন,জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দীর্ঘদিন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বেড়েছে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা। এতে কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় কর্ণফূলী নদীতে কমেছে পানি প্রবাহ। ফলে জোয়ারের সময় কর্ণফূলী নদীর নোনাপানি প্রবেশ করছে হালদায়। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় লবণাক্ততা ছড়িয়ে পড়ার কারণে ডিম ছাড়ছে না মা মাছ। হালদা নদীর উপর পিএইচডি ও মাস্টার্স থিসিস ডিগ্রি অর্জনকারী হালদা গবেষক ড.মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৪মে বৃহস্পতিবার হালদার নয়টি পয়েন্টে পানির নমুনা সংগ্রহ করে নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করে প্রমাণ মিলেছে হালদায় অতিরিক্ত লবণাক্ততার। এই গবেষকের মতে কার্পজাতীয় মাছের প্রজননের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্যারামিটার যেমন পানির তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, টিডিএস, এবং তড়িৎ পরিবাহিতার মান স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি। পানির তাপমাত্রা স্বাভাবিকের (২২ থেকে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াস) তুলনায় বেড়ে (৩১ থেকে ৩২.২) ডিগ্রী সেলসিয়াসে উন্নীত হয়। টিডিএস এর মান ৩০৯ থেকে ২০০০ পিপিএম এবং তড়িৎ পরিবাহিতার মান ৬২০ থেকে ৪০০০ মাইক্রোসিমেন্স/সেমি. এবং লবণাক্ততার মান ০.২ থেকে সর্বোচ্চ ২ পিপিটি পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।সর্বোচ্চ লবণাক্ততা রেকর্ড করা হয়েছে মদুনাঘাট হ্যাচারির বড়ুয়াপাড়ায় এবং সর্বনিম্ন আলম্মের কুমে। তবে বৃষ্টিপাত হলে লবণাক্ততাসহ অন্যান্য প্যারামিটারগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে অর্থাৎ বজ্রপাতসহ পর্যাপ্ত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নেমে আসলে পরবর্তী চতুর্থ জো অর্থাৎ অমাবস্যার জো (১৬-২১) মে, তা নাহলে পরবর্তী জুন মাসের পূর্ণিমার জো (১-৬) জুন অথবা সর্বশেষ (১৫-২০) জুন অমাবস্যার জো’তে কার্পজাতীয় মা মাছ ডিম ছাড়বে।