ঝিকরগাছায় নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ইট পড়ে শিশু শিক্ষার্থী মৃত্যুশয্যায়

 

শাহাবুদ্দিন মোড়ল ঝিকরগাছা যশোর : যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মোবারকপুর প্রি ক্যাডেট স্কুল পাড়ার একটি নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের উপর থেকে ইট পড়ার কারণে ৬বছরের শিশু শিক্ষার্থী জান্নাতী মারাত্মক আহত হয়ে। বর্তমানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। সে উক্ত গ্রামের নুর হোসেন বাবুর মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্মাণাধীন বহুতল ভবন বা বাড়ি নির্মাণে কোনো ধরনের আত্মরক্ষা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ১৩ জুন সোমবার পৌর সদরের ৬নং ওয়ার্ডের মোবারকপুর প্রি ক্যাডেট স্কুল পাড়ার স্কুলের পাশে ভেজালের ছেলে আলমগীর ও জাহাঙ্গীর নামের দুই ভাই একটি চারতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের বাড়িতে রাজমিস্ত্রী এবং কারেন্ট মিস্ত্রি একযোগে কাজ করছিল। পার্শ্ববর্তী জুয়েলের বাড়ির ভাড়াটিয়া বাজারের ডিম ব্যবসায়ীর মেয়ে জান্নাতি স্কুল থেকে ফিরে দুপুর বেলা রাস্তায় খেলা করছিল।
এমন সময় শ্রমিকদের হাত থেকে ছুটে এসে একটা ইটের অংশবিশেষ জান্নাতীর মাথার ওপর পড়ে। ক্ষনিকের মধ্যে শিশুটির সারাশরীল রক্তে ভিজে, সেখানেই ছটফট করতে থাকে। এদৃশ্য দেখে তার পরিবারের লোকজন এবং উপস্থিত জনতা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে যশোর নিতে যেতে বললে। তখন তাকে দ্রুত যশোরের কুইন্স (প্রাঃ) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেও অবস্থার অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার বিকেলে এ্যাম্বুলেন্স যোগে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়। পরে সেখানের কর্তব্যরত ডাক্তাররা তার মাথার অপারেশন সম্পন্ন করেছে। তার অবস্থা এখনও আশংকাজনক বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন।
প্রতিবেশী জরিনা খাতুন জানান, এর আগেও কাজ করার সময় আমার বাড়িতে ইট, কাঠ পড়েছে। বাড়িওয়ালাকে বললে উল্টে তারা আমাদের মারতে আসে। অনেকেই তাদেরকে বলেছে রাস্তার পাশে নিরাপত্তা নেট দিতে কিন্তু তারা কারো কথা শোনেনি।
স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান বাবু জানান, আমি ঘটনাটা শুনেছি। এরকম ঘটনা সত্যি দুঃখজনক। ঐ ভবন মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি পৌরসভাকে অনুরোধ করবো এবং শিশুটি চিকিৎসা শেষে বাড়ি আসলে তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার ইদ্রিস আলী জানান, ভবন নির্মাণের অনুমতি পত্রে আমরা লিখে দিয়েছি পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু কেউ আইন মানতে চায়না। এই দূর্ঘটনার পর ভবন মালিকের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ অভিযোগ করলে আমরা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেবো এবং ক্ষতিপূরণের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।
বাড়ির মালিক আলমগীর হোসেন জানান, শিশুটি কোথা থেকে চলে আসলো আমরা বুঝতে পারিনি। এর আগে কখনো এরকম ঘটনা ঘটেনি। কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কেউ বলেনি তাই প্রয়োজন মনে করিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শুক্রবার (সকাল ৬:৩৮)
  • ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০