মিথ্যা তথ্য দিয়ে মোংলার ব্যববাসয়ীকে পিরোজপুর নিয়ে মরধর ও আট লাখ টাকা লুটের অভিযোগ

 

পিরোজপুর প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোংলার চন্দন ফার্ণিচার এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স এর মালিক চন্দন অধিকারীকে ফ্রিজ কেনার মিথ্যা কথা বলে পিরোজপুরে নিয়ে মারধর ও নগদ আট লাখ টাকা লুট করেছে সন্ত্রাসীরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে চন্দন সরকার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

রোববার দুপুরে চন্দন সরকার জানান, শুক্রবার (২৪ জুন) তাকে পিরোজপুরের সবুজ খান পরিচয়ের এক ব্যাক্তি নিজেকে খান ইলেক্ট্রনিক্স পিরোজপুর বাজারের মালিক দাবি করে ফ্রিজ কিনতে চান। এ সময় তিনি তিন লক্ষ ৩২ হাজার টাকার ১০টি ফ্রিজ নিয়ে চন্দনকে পিরোজপুরে নিয়ে যেতে বলেন। চন্দন সরকার আরো জানান, আমি সাধারনত ডিলার সেল করি না। আমি কম্পানির কাছ থেকে মাল কিনে মংলার বাজুয়া এলাকায় বিক্রি করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি স্থানীয় ডিলারদের থেকে কম দামে ফ্রিজ বিক্রি করতে পারেন। আমার টাকার প্রয়োজন ছিল এ কারনে তার কথাই রাজি হয়ে যায়। মাল নিয়ে পিরোজপুরে পৌছায়। এরপর সবুজ পরিচয়ের ঐ ব্যাক্তি আমার মাল তাদের গুদামে আটকে রাখে এবং আমাকে পিরোজপুর বাজারের একটি দোকানে গিয়ে শার্টার বন্ধ করে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে ও ভিডিও করে সন্ত্রাসীরা।
সে সময় চন্দন জানতে পারে, সবুজ খান মূলত পিরোজপুর বাজারের ড্রীমটার্স ইলেক্ট্রনিক্স এর মালিক। তার আসল নাম আব্দুল আলীম খান। তিনি ওখানকার মার্সেল কম্পানির ফ্রিজের ডিলার। তার সাথে পিরোজপুরের বিউটি ইলেক্ট্রনিক্স এর মালিক আরীফসহ আরো ১৫ থকে ২০ জন লোক চন্দনকে মারধর করে। এরপর গুদামে গাড়ি রেখে তার ড্রাইভাররা ঐ অফিসে আসলে তাদেরকেও মারধর করা হয় ও ভিডিও করা হয়।
এ সময় চন্দন আরো বলেন, আব্দুল আলীম খান তখন মোংলার রাখি ইলেক্ট্রনিক্স এর ওসমান আলী হৃদয় নামে এক ব্যাক্তিকে ভিডিও কলে বার বার চন্দনকে দেখাচ্ছিলেন আর মারছিলেন। প্রাণ বাঁচাতে চন্দন ও তার গাড়ীর ড্রাইভার দৌড়ে পালাতে গিয়ে পিরোজপুর বাজারে আরো লোকজন তাদের ধরে। সন্ত্রাসীরা পিছনে চোর বলে ডাকায় বাজারের লোকজন তাদের মারধর করে। এ সময় সাদা পোশাকে ওয়ার্লেস ধারী একব্যাক্তিকে দেখে পুলিশ বলে পা জড়িয়ে ধরে চন্দন। সেই ব্যাক্তি আবার তাদের সন্ত্রাসীদের অফিসে নিয়ে সেখানে মারধর করে। পরবর্তীতে তার পকেটের থেকে নগদ সাড়ে সাত লাখ টাকা নিয়ে নেই সন্ত্রাসীরা। সাদা কাগজে তাদের মুচলেকা রাখে ও কান ধরে উঠবস করিয়ে ভিডিও করে সন্ত্রাসীরা। চন্দন ও তাদের ড্রাইভারদের পিরোজপুর সদর থানা পুলিশের কর্মকর্তা মাধ্যমে থানায় প্রেরন করে। থানায় গিয়ে চন্দন তার সাথে ঘটে যাওয়ার বর্ননা দিলেও পুলিশ কর্মকর্তা কোন ব্যবস্থা নেননি। বরং তাদের গাড়ি সহ ফ্রিজ আটকে রাখার হুমকি দেন। এ সময় চন্দ্রন তাদের ফ্রিজ কেনার মেমো দেখালে ফ্রিজ গুলো ছেরে দেয়। কিন্তু তাদের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা রাখে পুলিশের ঐ কর্মকর্তা। অপরদিকে সন্ত্রাসীরা চন্দন ও তার ড্রাইভারদের মারধর করায় তাদের কষ্ট হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তা চন্দন সরকারের নিকট থেকে তাদের আরো নগদ চার হাজার টাকা আদায় করে দেয়। চন্দন ও তার ড্রাইভারদের ছেরে দেয় শনিবার রাতে। আর সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে মারধরের ভিডিও ছেড়ে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দীতার কারনে মংলার রাখি ইলেক্ট্রনিক্স এর ওসমান আলী হৃদয়ের যোগ সাজসে তারা এই ঘটনা ঘটাতে পারে। এর আগে ওসমান আলী হৃদয় মার্সেল কম্পানিতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে চন্দনের নামে নিষেধাজ্ঞা জারি করান এই বলে যে কোন ডিলার যেন তার কাছে পণ্য বিক্রি না করেন। চন্দন বলেন, আমি কখনই ডিলার কাছ থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করি না। আমি কম্পানির নিকট থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করি।

এ বিষয়ে আব্দুল আলীম খানেএর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ.জ. মো: মাসুদুজ্জামান জানান, ওয়ালটন দুই গ্রুপের দ্বন্দ হয়েছিল শুক্রবার। কোন পক্ষ অভিযোগ না দেওয়ায় দুই গ্রুপকেই ছেরে দেওয়া হয়েছে। চন্দন অধিকারী অভিযোগ নিলে তা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পিরোজপুর প্রতিনিধি

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • শনিবার (দুপুর ২:৪১)
  • ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি
  • ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (বর্ষাকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০৩১