স্টাফ রিপোর্টার।। বিআইডব্লিউটিএ’র লীজ দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভূক্ত (রেজিঃ নং-বি-২১৭৬) বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতার হোসেন। তারা বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে সিবিএর নাম ভাঙ্গিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম করায় বিআইডব্লিউটিএ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম এর স্বাক্ষরিত একটি পত্রে চাঁদপুর শাখা কর্তৃক ক্যান্টিন পরিচালনার সকল প্রকার অনুমতিপত্র বাতিল করেন। এছাড়া চাঁদপুর নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন চাঁদপুর লঞ্চঘাটস্থ ক্যান্টিনটি পরিচালনার জন্য মোঃ মালেক বেপারীকে ৮টি শর্তে ২ বছরের জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন।
জানা যায়, বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার হলেন অফিস সহকারী ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতার হোসেন হলেন মার্কম্যান। বিআইডব্লিউটিএ’র জায়গায় অবৈধভাবে কাউকে লীজ প্রদান, কাউকে দোকান নির্মাণ, কাউকে স্থাপনা করে দিবেন বলে তারা দুজন মিলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়েছেন। আবার অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েও স্থাপনা বা দোকান উচ্ছেদ করে দিয়েছেন। বিআইডব্লিউটিএ’র যখন যে কর্মকর্তা চাঁদপুরে আসেন তখন তারা সিবিএ’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাদের ঘনিষ্ট আপনজন হয়ে উঠেন এবং নানা অপকর্ম করেন। ২০১৬ সালে সিবিএ সভাপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার চাঁদপুর নদী বন্দরের নিয়ন্ত্রণাধীন চাঁদপুর লঞ্চঘাটস্থ ক্যান্টিনটি পরিচালনার জন্য মোঃ মালেক বেপারীর কাছ থেকে ১শ ফুট জায়গা লীজ দেওয়ার নাম করে ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। এর কয়েক দিনপর সিবিএ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতার হোসেন লীজের নামে আরোও ১লক্ষ টাকা নেন। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে মালেক বেপারীর কাছ থেকে তারা নানা অজুহাতে টাকা নিতেন। তারা সর্বমোট প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা হাততিয়ে নেয়। ৪ বছরে লীজের কোন সুরাহা না হওয়ায় মালেক বেপারী ২০২০ সালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একটি শালিশি বৈঠকের আয়োজন করেন। শালিশি বৈঠকে হোসেন চৌকদার, লোকমান হোসেন বেপারী, মিন্টু পাটওয়ারীসহ আরোও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সিবিএ সভাপতি ছাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক আকতার টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বিকার করে এবং একটি ৩শ টাকার স্ট্যাম্পে তারা স্বাক্ষর করেন। তারা নদীর তীরবর্তী ভাসমান ডর্কইয়ার্ড থেকে মাসিক চাঁদা আদায় করেন বলেও নাম প্রকাশে অনিশ্চুক কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান।
বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মোঃ আব্দুস সাত্তার জানান, আবদুল মালেক বেপারী
বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) চাঁদপুর জেলা শাখার নামে বরাদ্দকৃত
হোটেলটি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। তাকে এটা ছাড়ার জন্য বললে সে আমাদের নামে নানা অপপ্রচার করছে। লেনদেনের বিষয়টা ভিত্তিহীন।
বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আকতার হোসেন জানান, বিআইডব্লিউটিএ’র শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন (সিবিএ) চাঁদপুর জেলা শাখার ক্যান্টিনটি আবদুল মালেক বেপারী পেশী শক্তি ব্যবহার করে দখল করে রেখেছে। আমি তার সাথে কোন লেনদেন বা কাগজপত্র করিনি।
মালেক বেপারী জানায়, লঞ্চঘাটের পরিত্যাক্ত স্থানটি আমি মেরামত করে প্রায় ১০ বছর যাবত হোটেল ব্যবসা করছি। আমাকে ১শ ফুট জায়গা লীজ দেওয়ার নাম করে আব্দুস সাত্তার ও আকতার বিভিন্ন সময়ে আমার কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকা নিয়েছে। কয়েকবার তাদের কাছে লীজের বিষয়ে জানতে চাইলে ২ বছর আগে টাকা ফেরত দিবে বলে শালিশীর মাধ্যমে আমার সাথে তাদের স্ট্যাম্প হয়। এখন বিভিন্ন ভাবে তারা আমাকে দোকান থেকে বের করে দেবে বলে হুমকি দেয়।
বিষয়টি সম্পর্কে জানেন মোঃ লোকমান হোসেন বেপারী। তখন তিনি শালিশী বৈঠকে স্বাক্ষী হিসেবে ছিলেন। তিনি বলেন, ছাত্তার ও আকতার হোটেলের বিষয়ে মালেক বেপারীর কাছ থেকে খাতায় সই দিয়ে টাকা নিছে। আমরা এ নিয়ে শালিশি বইছিলাম। দিব দিব বলে এখনও টাকা দেয় না। আমি তাদের কাছে টাকা চাইলে তারা বিভিন্নভাবে উচ্ছেদ এর হুমকি দিচ্ছে।
চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মোঃ কায়সারুল ইসলাম জানান, সারাদেশের ৮টি বন্দরের ক্যান্টিন কে পরিচালনা করে সিবিএ। আর সিবিএ কে অনুমোদন দেয় বিআইডব্লিউটিএ। সিবিএ কাকে দিয়ে পরিচালনা করবে, এটা তাদের বিষয়। তবে অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তারিখ: ১১.০৯.২০২২খ্রি