হাবিবুর রহমান, চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অসহায়, দুস্থ, হতদরিদ্র্য ও এতিমদের জন্য দেওয়া সৌদি সরকারের কোরবানির পশুর মাংস সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের মাঝে ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে উপজেলা শহরে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা সূত্রে জানাযায়, জেলার ৯ উপজেলার জন্য সৌদি সরকারের দেওয়া ১৭৭ কার্টুন কোরবানির পশুর মাংস বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চিলমারী উপজেলায় ১২ কার্টুন মাংস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব মাংস জেলার বিভিন্ন এতিম খানা, লিল্লাহ বোর্ডিং সহ দুস্থদের মাঝে বিতরণ করার জন্য বলা হয়েছে।
চিলমারী উপজেলার অনেক সাংবাদিক জানান, কয়েক বছর পর সৌদি সরকারের দেওয়া কোরবানির মাংস চিলমারীতে পৌঁছালে ও তা হতদরিদ্র্য ও বঞ্চিতদের মাঝে বিতরণ না করে সে সব স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সাংবাদিকরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। বরাদ্দের ১২ কার্টুন মাংসের মধ্যে ৬ কার্টুন মাংস, ছয় ইউনিয়ন পরিষদে দেওয়া হয়েছে। বাকি ছয় কার্টুন মাংস জন প্রতিনিধি, উপজেলার দুই প্রেসক্লাবের সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতাকর্মীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এসব মাংস বরাদ্দের প্রকৃত উদ্দেশ্য ব্যহত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কোন ও কিছু অবগত নন বলে জানিয়েছেন চিলমারী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজাউল করিম লিচু। তিনি বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক কাজে ঢাকায়। এ বিষয়ে কিছু জানি না। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রুকুনুজ্জামান শাহীন, দুস্থ ও হতদরিদ্র্য মানুষ সহ সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে মাংস বিতরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, জনপ্রতিনিধিদের কে তাদের এলাকার দুস্থদের মাঝে বিতরণের উদ্দেশ্যে মাংসের কার্টুন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ও উপজেলা পরিষদের স্টাফ, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে ও মাংস বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জন্য কেন, এমন প্রশ্নে উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানে (চিলমারীতে) দীর্ঘদিন ধরে এই চর্চা চলে আসছে। তাই আমি নতুন করে কিছু বলিনি। ’নিজে সদস্য হলে ও দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এ সব মাংস নিজে নেননি বলে জানিয়েছেন, চিলমারী প্রেসক্লাবের সদস্য মোঃ মমিনুল ইসলাম বাবু বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। এই মাংসে সম্পুর্ণ অধিকার হলো দুস্থ, অভাবগ্রস্থ ও এতিমদের। এই উদ্দেশ্যেই এসব মাংস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে ও সাংবাদিক ও রাজনৈতিক দলের ভাগ বসানো লজ্জাজনক। এটা কোন ও ভাবেই কাম্য নয়। এই মাংস সাংবাদিকরা না নিলে ও পারতেন। প্রেসক্লাব চিলমারীর সভাপতি মোঃ মনিরুল আলম লিটু মাংস পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের ক্লাবে মাংস পেয়েছি। এগুলো নেওয়া ঠিক নয়। তবে আমাদেরকে ডেকে দিয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের কে দিয়ে গরিব ও দুস্থদের কে দেওয়া হয়েছে, আওয়ামী লীগ ও সাংবাদিকদের কে দেওয়া হয়নি। মাংস সঠিক ভাবে বিতরন করা হয়েছে।