মেহেদী হাসান,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
ধান লিচুতে ভরপুর, উত্তরের জেলা দিনাজপুর। এবার তার সাথে যুক্ত হতে চলেছে লেবু জাতীয় ফসল মাল্টা। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় গড়ে উঠছে সম্ভাবনাময় মাল্টার বাগান। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এতে আগ্রহ বাড়ছে এই এলাকার চাষিদের।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যানাগেছে, উপজেলায় প্রায় ১৭হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের মাঝে মাল্টার চারা, প্রয়োজনীয় সার, প্রশিক্ষণ প্রদান ও মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ করায় দিনদিন মালটা চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের।
রসালো ফলের মধ্যে মাল্টা অন্যতম। ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এ ফল। অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাল্টার আবাদ। চাষিদের মধ্যে উৎসাহের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত বাড়ছে বাগানের সংখ্যাও।
উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের রাজারামপুর গোয়ালপাড়া গ্রামের মালটা চাষী সাইফুল ইসলাম চৌধুরী জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে ১.২৫ একর জমিতে তাদের বিনামূল্যে দেয়া ৪৫০টি মাল্টা চারা রোপণ করেছি। মাত্র ২২মাসে ২৫০ গাছে মাল্টা ধরেছে। প্রতিটি গাছে ৩০ থেকে ১২০টি পর্যন্ত মাল্টা ধরেছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে গাছের বয়স বিবেচনা করে কিছু কিছু ফল ছিড়ে ফেলে দিয়েছি। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় একলক্ষ টাকা। যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে তিন থেকে চারলক্ষ টাকা বিক্রয় হবে তিনি আশা করেন।
চকচকা কলা বাগান এলাকার ফিজারুল ইসলাম ভুট্টু বলেন, তিনি প্রথমবার তার বাড়ীর পাশে ২০শতক জমিতে মালটা
চাষ করে সফল হয়েছেন,তার লাগানো গাছগুলোতে থোকায় থোকায় মালটা ধরেছে,
কিছুদিনের মধ্যে সেগুলো বাজারজাত করা যাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শাহানুর রহমান জানান, লেবু জাতীয় ফসলের সম্প্রসারণ, ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় সাইফুল ইসলাম চৌধুরীকে ৪৫০টি বারি-১ জাতের মাল্টা চারা বিতরণ করা হয়েছিল। কৃষি অফিস থেকে যাবতীয় পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার তত্বাবধানে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করায় ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এ অঞ্চলের মাটি মাল্টার জন্য খুবই উপযোগী।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, ফুলবাড়ীতে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ১৭হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ফল ধরেছে ৫ থেকে ৬ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ থেকে ১০ টন মাল্টা উৎপাদন হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় মাল্টা চাষে ঝুঁকছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। ফলে লেবু জাতীয় ফসল মাল্টার ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
প্রেরক,
মেহেদী হাসান
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি