তানোর প্রতিনিধি : জসিম উদ্দিন, তারা পাচ ভাই, অনেক আলু চাষ করে,তাদেরকে এত সার কোন ডিলার দিতে পারবে না, তারা এজন্য নোয়াপাড়া থেকে সার এনেছেন, এতে কোন সমস্যা নাই, নিজেদের জন্য এনেছেন এভাবেই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে কথা গুলো বলেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের বিসিআইসির সার ডিলার অন্যতম সিন্ডিকেট প্রনব সাহা। তিনি পাচন্দর ইউপির ডিলার হলেও তানোর পৌর সদর গোল্লাপাড়া বাজারে ক্ষমতাসীন দলের এক নেতার ছত্রছায়ায় দেদারসে ব্যবসা করছেন। তিনি তার পয়েন্টে সার না নামিয়ে পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ের বালাইনাশকের ব্যবসায়ী জসিমের দোকানে একট্রাক ডিএপি সার নামান এবং জসিমের সাথে বেপরোয়া সিন্ডিকেট করেন। কারন পটাশ সারের তীব্র সংকটের সময় সাড়ে ১৫০০- ১৬০০ টাকা পর্যন্ত কিনতে হয়েছে কৃষকদের। আর প্রনবের মাধ্যমে জসিম তার বাড়িতে প্রচুর পটাশ সার মজুদ করে ওই সময় ভোরে ভোরে পাচার করতেন যা তার গ্রামের একাধিক প্রবিন ব্যক্তিরা এই প্রতিবেদক জানিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে জসিমের বাড়ির সামনের রাস্তায় দাড়িয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি এক প্রকার দাম্ভিকতা নিয়েই বলেন অবশ্যই কয়েক হাজার বস্তা পটাশ আছে।
জানা গেছে, গত রোববার বিকেলের দিকে নোয়াপাড়া মোল্লা ট্রেডার্স থেকে একট্রাক ডিএপি সার আনেন তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ের বালাইনাশক ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন। তিনি সরাসরি নোয়াপাড়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিনেছেন সার বলে জানান । তিনি আরো জানান, ডিলার আমাকে চাহিদামত সার দিতে পারে না। এজন্য নোয়াপাড়া দালালদের মাধ্যমে কিনা হয়েছে।
আপনি বালাইনাশক ব্যবসায়ী ট্রাকে করে এভাবে সার আনা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান টাকা থাকলে সব হয়।
এঘটনায় সোমবার দুপুরের পরে জসিম অবৈধ ভাবে সার মজুদ করায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু মজুদ কৃত সারের কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।
বিসিআইসির ডিলার প্রনব সাহা জানান, ধরে নাও এটা আমার সার, পরে বলেন জসিম আমার কাছ থেকে নোয়াপাড়ার একজনের মোবাইল নম্বর চেয়েছিল। জসিম সার এনেছে আপনার এত তোড়জোড় কেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন এসব ব্যবসায়ীদের অভ্যান্তরিন বিষয় থাকে যা বলা যায় না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ কে মজুদ সারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার জরিমানা করা হয়েছে, সারগুলো কার জানতে চাইলে তিনি জানান, জসিম বলেছে তাদের নিজের সার। সেকি এভাবে নিয়ে আসতে পারে বা মজুদ সারের কোন ব্যবস্থা হবে কিনা প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি বলেন অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ কে সারের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান বুধবারে অফিস সময়ে আসবেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি তালন্দ বাজারে ধানতৈড় গ্রামের এক প্রবীন কৃষক পটাশ নিতে যান, তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে নাম প্রকাশ না করে বলেন, কি বলব ফজরের আজানের আগে ও পরে জসিম ট্রাকের ট্রাক পটাশ সার পাচার করেছেন। এসব পটাশ সব প্রনবের। তারা যে ভাবে সার নিয়ে সিন্ডিকেট করেছে তা কল্পনা তীত। এসব দেখার কেউ নেই।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সার নিয়ে বেপরোয়া সিন্ডিকেট বাড়তি দামসহ নানা বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি দপ্তর উপজেলার বিসিআইসি, বিএডিসি ও বালাইনাশক ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয় ডিলারেরা ছাড়া বস্তাভর্তি সার বিক্রি করা যাবে না এবং বালাইনশক ব্যবসায়ীরা খুচরা সার বিক্রি করবেন। তবে যারা সাব ডিলার তারা এবং যারা শুধু বালাইনাশক ব্যবসায়ী তারা কোন ভাবেই সার বিক্রি করতে পারবে না। যারা এনির্দেশ অমান্য করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়। এরপর থেকে অনেক বালাইনাশক ব্যবসায়ীরা সার বিক্রি বন্ধ করে দেন। অথচ জসিম বিসিআইসির ডিলার প্রনব সাহার মাধ্যমে একট্রাক সার আননেল জরিমানা করা হল মাত্র ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু সারের কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাহলে এমন সভা করা মানে লোক দেখানো ছাড়া কিছুই না বলেও কৃষকদের মন্তব্য।
সারোয়ার হোসেন
২০ সেপ্টেম্বর /২০২২ইং