পলাশের দন্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির ৩ আসামি ১৪ বছর পর গ্রেপ্তার

পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি : দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে ১৪ বছর ভিক্ষাবৃত্তির পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন হত্যা মামলায় ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামী। সোমবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলার আমবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান, নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের মৃত মইজ উদ্দিনের ছেলে আলেক মিয়া (৬৫), তার স্ত্রী মোছাম্মদ রুপবান (৫৭) ও ছেলে শরীফ মিয়া (৩৮)।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০০৯ সালে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের গালিমপুর গ্রামের শামসুল হককে (৪৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আলেক মিয়া, শরীফ মিয়া ও রুপবানসহ মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়। পরে ২০১৬ সালে শামসুল হক হত্যা মামলার বাদী তার ছেলে জহিরুল হককেও (২৮) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে আসামীরা।

এই হত্যার ঘটনায়ও তাদের বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যা মামলা হয়। আদালত ২০১৭ সালে শামসুল হক হত্যা মামলার ১২ আসামীর মধ্যে ছয় জনকে খালাস প্রদান ও ছয় জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ছয় জনের মধ্যে একজন জেলহাজতে থাকলেও বাকি ৫ আসামী দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে পলাতক ছিল। তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তির আড়ালে পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

অবশেষে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সকালে গাজীপুর সদর উপজেলা এলাকা থেকে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পলাতক বাকী দুই আসামী শরাফত মিয়া ও আব্দুল গাফফার মিয়াকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। জহিরুল হক হত্যা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান বলেন, পুলিশ ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে বিশ্বস্ত গুপ্তচরের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক তাদের গ্রেপ্তারের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আসতেছিল। কিন্তু আসামীরা অত্যন্ত সুচতুর হওয়ায় তারা তাদের স্থান ও পেশা পরিবর্তন করে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে আত্মগোপনে ছিল। অবশেষে তাদের গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্বামী ও শ্বশুর হত্যা মামলার আসামীদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর করার দাবি জানিয়ে নিহত জহিরুল হকের স্ত্রী রোজিনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী ও শ্বশুর হত্যার বিচার চাওয়ায় প্রতিনিয়ত আসামী পক্ষের হুমকির কারণে দুই শিশু সন্তান নিয়ে ভিটেবাড়ি ছেড়ে দীর্ঘ পর বছর মানবেতর জীবন-যাপন করছি।

স্বামীকে হত্যার ঘটনায় পলাশ থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলাম। যা এখনো নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। এরপর থেকেই আসামীরা ফোনে ও আসামী পক্ষের স্বজনরা সরাসরি হুমকি দেওয়ার কারণেই আমি স্বামীর বাড়ি ছেড়ে দীর্ঘ বছর বাপের বাড়িতে রয়েছি। ফাঁসিরদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক ওই দুই আসামীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করাসহ গ্রেপ্তারকৃতদের দ্রুত ফাঁসি কার্যকর দেখতে চান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • সোমবার (রাত ৪:৫০)
  • ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২০শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০