চট্টগ্রামের খুলশীর জালালাবাদ পরিবেশ বিরোধী পাহাড় কাটা বন্ধে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণে মানববন্ধন।

 

স্টাফ রিপোর্টার:

চট্টগ্রাম নগরীর খুলশীর জালালাবাদে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা বন্ধের দাবিতে ১৯শে ফেব্রুয়ারি বিকেলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জালালাবাদের স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত ও ভুক্তভোগী বাসিন্দাগণ।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বহুদিন যাবত ধরে কুখ্যাত একটি চক্র পরিবেশ আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে স্বগোরবে চালিয়ে যাচ্ছে পাহাড় কাটার মহোৎসব। যেন দেখার কেউ নেই। প্রতিবাদ করতে গিয়ে হতে হয় লাঞ্ছিত-অপমানিত। পেতে হয় বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি। পেশি শক্তি ও স্বার্থের রোশানলে হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত পরিবেশের ভারসাম্য। আইনের ফাঁক-ফোকরে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে আবার অনেকেই।
এহেন অপরাধ-দুর্নীতি যেন সুনিতিতে পরিণত হয়েছে। ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিবাদ করলেও মিলছে না তার কোন প্রতিকার। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনাতো ঘটছেই, নতুন করে সৃষ্টি হচ্ছে আবার মরণ-ফাঁদ। যেন মানব নিধন অভিযানে নেমেছে চক্রটি। তাই বিভিন্ন রকমের হুমকি-ধমকিকে উপেক্ষা করে, নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়ে হলেও স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে উল্লেখিত বিষয়ে রাষ্টীয় চলমান আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে ১৯ শে ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিজেদের পরিবার-পরিজন ও পরিবেশ বাঁচানোর দাবিতে মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীগণ। দাবিতে উল্লেখযোগ্য বিষয়ে বলা হয়, প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সহ-অনতিবিলম্বে পাহাড় কাটা বন্ধ করে পাহাড়ে বসবাসরত মানুষের নিরাপত্তা ও পরিবেশ বাঁচানোর লক্ষ্যেই আমাদের এই আজকের মানববন্ধন। বক্তব্যে তারা আরো সম্পৃক্ত করেন, বহুদিন যাবত ধরে পাহাড় কাটার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের আমরা সচেতন মুলক বিরোধিতা করলেও পাল্টা জবাব এ মেলেছে প্রাণ নাশের হুমকি। তাই আমরা সমস্ত ভয়-ভীতিকে উপেক্ষা করে সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়ে অনতিবিলম্বে একটি সু-বিচার ও সুরাহা আশা করছি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (৫৪) সাংবাদিকদের বলেন, এই দাবি আমাদের প্রাণের দাবি, এই দাবি আমাদের পরিবার-পরিজন ও স্থানীয় মানুষসহ পরিবেশ বাঁচানোর মূল দাবি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন – এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি সুরাহা পেতে আমি ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে গত ১২-০২-২০২৩ ইংরেজি পরিবেশ অধিদপ্তরের সম্মানিত পরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদনের মাধ্যমে পুরো বিষয়টি অবগত করি, এবং তারও আগে গত ০৮-০২-২০২৩ ইংরেজি খুলশী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। দুঃখজনক হলেও সত্যি এখনো তার কোন প্রতিকার মেলেনি। আমরা বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভীষণভাবে হতাশাগ্রস্থ। তাই এ মানববন্ধন এর মাধ্যমে রাষ্ট্রের চলমান আইনের কাছে যেন আমরা একটি সু-বিচার পাই।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এভাবে যদি পাহাড় কাটা বন্ধ না হয় তাহলে অচিরেই পরিবেশ তার ভারসাম্য হারিয়ে এসব ঘটনার প্রতি উত্তর দিতে দেরি করবে না। কারণ প্রকৃতির বিরুদ্ধে যাওয়া মানে মানব সম্প্রদায়কে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া।
কিন্তু বাস্তবতা হলো রাষ্ট্রের অনেকগুলো বিধি-বিধান রয়েছে পরিবেশ নিয়ে বিগত পরিবেশ আইনগুলো বর্তমানে অনেক বেশি ডেভেলপ করেছে।
তাতে করে এই মুহূর্তেই যদি তা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা না যায়, তাহলে আমরা নিজেরাই নিজেদের ক্ষতি সাধনের জন্য দায়ী হবো।
পরিবেশ বিরোধী কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে, সচেতন ও পরিবেশবান্ধব সমাজ বলেন – জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ প্রতিটি মানুষ যদি হয় নিবেদিত তাহলে কেবল একটি সুন্দর সমাজ, একটি সুন্দর পরিবেশ, ও সুষ্ঠু- সমৃদ্ধ একটি পৃথিবী গড়ে তোলা সম্ভব। যে আবাসভূমি হবে সম্পূর্ণ নিরাপদ। কারণ সমাজের প্রতিটি মানুষ যেমন একজনের প্রতি অন্যজনের সম্মান-শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিজেকে গড়ে তোলে! ঠিক তার পাশাপাশি অতীব জরুরি পরিবেশ রক্ষায় এগিয়ে আসা। এবং একই বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পরিবেশ রক্ষার স্লোগানে বদ্ধপরিকর হয়ে কাজ করে যেতে হবে। তাহলে বেঁচে যাবে আমাদের প্রিয় ভূখণ্ড ও মানব সম্প্রদায়। মানব জীবনের প্রতিটি নিঃশ্বাস যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি গুরুত্বপূর্ণ পরিবেশ রক্ষার প্রতিটি বিধি-বিধান ও নিয়ম-নীতি। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো আমাদের সমাজের স্বার্থন্বেষী ব্যক্তি বা মহল দ্বারা প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে আমাদের বেঁচে থাকার শ্রেষ্ঠ অবলম্বন এই পরিবেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

আজকের দিন-তারিখ
  • বৃহস্পতিবার (রাত ১২:৪৮)
  • ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৩শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)
পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১