অন্তর আহমেদ নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ চিকিৎসার নামে প্রতিনিয়তই কৌশল পরিবর্তন করে কথিত কবিরাজ’রা অপচিকিৎসা করে লোক ঠকানোর ব্যবসায় মেথে উঠেছেন। ঝাড়-ফুঁকে দেবার পাশাপাশি যৌন সমস্যা সমাধানের জন্য যৌন- উত্তেজনার সিরাপ তুলে দেওয়া হচ্ছে রোগীদের হাতে। শুধু তাই নয় জটিল ও কঠিন রোগ সাড়ানোর জন্য অভিনয়ের মাধ্যমে বেহুলার লক্ষিণদার, মানসিপূজা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয় রুগী দের। এ নিয়ে সমালোচনা ঝড় উঠেছে এলাকায়।
অনেকেই বলছেন, বেহুলার লক্ষিণদার গান ও মানসিপূজা করবেন সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষ। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন ধরণের রোগ সাড়ানোর নামে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের পূজা করাতে বাদ্ধ করাচ্ছেন এই কবিরাজ। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে পত্নীতলার আমাইড় ইউনিয়নের অষ্টমাত্রাই গ্রামে।
অষ্টমাত্রাই গ্রামের তৈয়মুদ্দীন এর স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীর হঠাৎ করে ব্রেনের সমস্যা দেখা দেয় আমি নিকটবর্তী হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে বেশ কিছুদিন চিকিৎসা করি। সমস্যা সমাধান না হলে মানুষ মুখে কবিরাজের চিকিৎসার কথা শুনে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে মিঠাপুরের সামছুল কবিরাজের কাছে যাই। সামছুল কবিরাজ চিকিৎসার জন্য তিনি তার আসনে পানির গ্লাসে দেখে বলেন আপনার স্বামীর সাথে মানসা দেবী আছে। বেহুলার গান করলে আপনার স্বামী ভালো হয়ে যাবে। স্বামীকে ভালো করার জন্য আমি আমার বাড়ির সম্পদ নষ্ট করে সামছুল কবিরাজের কথা মতো ৫০থেকে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে বেহুলার গান করায়। গান করানোর পরেও আমার স্বামী ভালো না হওয়াই আবার সামছুল কবিরাজের কাছে গেলে তিনি তালবাহনা করেন। এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে এই ভুয়া কবিরাজ বলেন আপনার স্বামীকে ভালো কোন ডাক্তার দেখান কবিরাজি চিকিৎসা দিয়ে কোন কাজ হবে না।
এই বিষয়ে এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কথিত মিঠাপুরের সাধক ওরফে সামছুল কবিরাজ নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের মো: খলিলুর রহমানের ৩য় ছেলে। তিনি কবিরাজির নামে বিভিন্ন অপচিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এর জন্য অনেকবার তিনি মানুষের হাতে মারপিট খেয়েছেন তারপরও তার এই অপচিকিৎসা কোন ভাবে থামছে না। অনেকেই বাসায় নিয়ে এসে চিকিৎসা দেওয়ার নামে সর্বশান্ত করেছেন।
কবিরাজ সামছুল আলমের বাসায় গিয়ে না পেয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা না বলে তার সহযোগী মো.লুৎফর রহমান বলেন, আমরা নিয়ম মেনে চিকিৎসা দিয়ে থাকি আমরা কোন অপচিকিৎসা দেয় না। বেহুলার লক্ষিণদার গান ও মানসিপূজা করার বিষয়ে বলেন এই গুলো না করলে রুগী ভালো হবে না। এই পূজা সবাই করতে পারবে কোন সমস্যা নাই।
পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, কবিরাজি চিকিৎসা করে অনেকেই বিকলাঙ্গ, মৃত্যুর মতো ঘটনা ঘটেছে তারপরেও গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছেন। সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রমান সহকারে কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।